বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শিগগিরই নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে। কারা থাকছেন নতুন এই কমিটিতে; তা নিশ্চিত করে দলের কেউই বলতে পারছেন না। তবে আলোচনায় আছেন দলের অনেক নেতাই। গত শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ করে কোনো কারণ উল্লেখ না করে আড়াই মাসের ব্যবধানে সাইফুল আলম নীরব ও আমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন দলের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি। তবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শিগগির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে দলের উত্তরের কমিটি বিলুপ্তির পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কমিটির নেতাদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। গুঞ্জন আছে যে কোনো সময় দক্ষিণের কমিটিও বিলুপ্ত করা হতে পারে। ওই কমিটির এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের প্রমাণ দলের শীর্ষপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
দলের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটি কী অভিযোগে বিলুপ্ত করা হয়েছে- এ বিষয়ে দলের কোনো নেতার কাছেই সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। কেউ বলছেন, চাঁজাবাজিসহ কমিটির নেতারা নানা অনৈতিক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আবার কেউ বলেছেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে দলের অভ্যন্তরীণ কোনো ঘটনার কথা। মহানগর উত্তরের কমিটি বিলুপ্তির পর দলের সিনিয়র নেতারা এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
সাইফুল আলম নিরব আমাদের সময়কে বলেন, গত ৭ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাকে (সাইফুল আলম নিরব) আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করেন। তখন থেকেই আমাকে ঘায়েল করতে মাঠে নামে আমার প্রতিপক্ষরা। আমাকে ‘চাঁদাবাজ-দখলবাজ’ বানানোর মিশনে নামে, যার একটিরও কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। তবে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি সেটাকে সম্মান করি।’ বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, এর মাঝেও ভালো কিছু আছে। আশা করছি শিগগির দল নতুন কমিটি ঘোষণা দেবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরের নতুন কমিটিতে স্থান পেতে বেশ লবিং-তদবির শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা।
এ অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতারা কেউ কেউ বলছেন, ভুলভ্রান্তি যাই হোক সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হককে নেতৃত্ব পর্যায়ে রেখে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করাই হবে উত্তম কাজ। কারণ, এই দুই নেতাই নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দীর্ঘদিন তাদের কারাগারেও থাকতে হয়েছে।
তবে দলের গুরুত্বপূর্ণ অপর এক নেতা বলেন, পদোন্নতি দিয়ে সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হককে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্লিন ইমেজের কোনো নেতাকে সভাপতি অথবা আহ্বায়ক এবং যুবদল-ছাত্রদলের অপেক্ষাকৃত তরুণ কাউকে সদস্য সচিব অথবা সাধারণ সম্পাদক করা যেতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরের কমিটিতে নিরব বা আমিনুলের বাইরে সভাপতি অথবা আহ্বায়ক হিসেবে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের নাম। বিগত আন্দোলন চলাকালে ডোনার উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দলের হাইকমান্ডের কাছে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। আলোচনায় আছেন এমএ কাইয়ুমও। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এসএম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, আক্তার হোসেন, মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফখরুল ইসলাম রবিনসহ এক ডজন নেতার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে।
দলের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা বলেন, উত্তরে এক সময় বিএনপির কমিটি গঠন করতে চিন্তা করতে হতো, এখন সেই অবস্থা নেই। যুবদল ছাত্রদলের সাবেক বহু নেতা আছেন, যারা এখন দায়িত্ব পালনের মতো যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন