বাংলাদেশকে ১৪০ রানে থামিয়ে ব্যাটারদের কাজটা সহজ করে যান অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। সেই পথে হাঁটতে ভুল করেনি অজি ব্যাটাররাও। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেডের জুটিতেই জয়ের ভিত গড়া হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। পাওয়ারপ্লেতে পাওয়ার দেখিয়ে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৫৯ রান জমা করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর বৃষ্টিতে কিছু সময়ের জন্য ম্যাচ বন্ধ থাকলেও এগিয়েই ছিল অজিরা।
বৃষ্টির পর আগ্রাসী হেডকে ৩১ রানে ও অধিনায়ক মিচেল মার্শকে ১ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে অজিদের ইনিংসের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেছিলেন রিশাদ হোসেন। তবে বাংলাদেশের সেই মধুর সময় দীর্ঘায়িত করতে দেননি ওয়ার্নার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ফের ব্যাট হাতে চড়াও হন। তাদের যতক্ষণে বৃষ্টি এসে থামিয়েছে; ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। ১১.২ ওভারে ২ উইকেটে অজিদের সংগ্রহ ১০০ রান। এরপর বৃষ্টি থামলেও যা না থামলেও তা। এরপরও বৃষ্টি থামলে হয়তো অলৌকিক কিছু হলেও হতে পারত। ম্যাচে জয় না আসলেও বোলাররা উইকেট তুলে ব্যক্তিগত অর্জন রাঙাতে পারতেন। তবে সেই সুযোগ বাংলাদেশকে দেয়নি বৃষ্টি। বৃষ্টি আইনে শেষ পর্যন্ত ২৮ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
প্যাট কামিন্সের হ্যাটট্রিক, ওয়ার্নারের ফিফটির ম্যাচে বৃষ্টিতে জয় নিশ্চয় আশা করেনি অজিরা। এরপরও সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে এ জয় নিশ্চত করেই সেমির পথে এগিয়ে নেবে অজিদের। আর বাংলাদেশকে এ হার ফেলে দিয়েছে কঠিন পরীক্ষায়। যেখানে সেমিতে খেলতে শেষ দুই ম্যাচে ভারত ও আফগানিস্তাকে হারাতেই হবে নাজমুল শান্তর দলকে।
এদিন বাংলাদেশের ছোট লক্ষ্যে শুরু থেকেই আগ্রসী ক্রিকেট খেলেছে অজি ব্যাটারা। ৬.২ ওভারে ৬৪ রান করার পর মাঝে বৃষ্টিতে কিছু সময় খেলা বন্ধ থেকে ফের শুরু হয়। তাতে প্রথম সাফল্যের মুখ দেখে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রুটা এনে দেন রিশাদ হোসেন। ফেরান ২১ বলে ৩১ করা আগ্রাসী হেডকে। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ওভারে এসে ফেরান অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শকে। ৬ বলে ১ রান করে রিশাদের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। তবে সেখান থেকে অজিদের টেনে তুলেন ওয়র্নার-ম্যক্সি জুটি। ফের চড়াও হন দু’জনে। ফিফটির দেখা পেয়ে যান ওয়ার্নার। চলতি টুর্নামেন্টে যা তার দ্বিতীয় ফিফটি। এরপর অবশ্য ফের বৃষ্টি শুরু হলে ২৮ রানে এগিয়ে থেকে ম্যাচে জয় পায় অজিরা।
তার আগে, টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরুতেই তানজিদ তামিমের উইকেট তুলে নেয় অজিরা। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের খাতায় সংখ্যা ১। এমন ধাক্কা সামলে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন লিটন-শান্ত জুটি। তাদের দুজনে ভর করে দলীয় ফিফটি রান পেরোয় বাংলাদেশ। মনে হচ্ছিল খারাপ সময় পেছনে ফেলে এই ম্যাচ দিয়েই রানে ফিরবেন দু’জনে। তবে সেটা পারেনি তারা। নাজমুল শান্ত ৩৬ বলে করেছেন ৪১ রান। তার আগে ২৫ বলে ১৬ রান করেন লিটন। তাতে বড় সংগ্রহের পথ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। পরে শেষ দিকে ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে ১৪০ রানের পুঁজি পাইয়ে দিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়।
এদিন বাংলাদেশের ইনিংসে বল হাতে হ্যাটট্রিক করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। চলতি বিশ্বকাপে যা প্রথম হ্যাটট্রিক। কামিন্সের আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছয়জন বোলার হ্যাটট্রিক করেছেন। ব্রেট লির পর কামিন্সই দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান, যিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই কীর্তি গড়লেন। এদিন ১৮তম ওভারের শেষ দুটি বলে পরপর মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসানকে আউট করেন কামিন্স। এরপর ২০তম ওভারের প্রথম বলেই তুলে নেন তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট। যার সুবাদে হ্যাটট্রিক পূরণ হয় তার। এদিন প্যাট কামিন্স ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন