অবশেষে বিজয়ের মালা তাদের গলাতেই উঠলো, যারা দেশের সিনেমা ও প্রেক্ষাগৃহ বাঁচানোর লড়াইয়ে হিন্দি সিনেমা আমদানি করার জোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
সোমবার (১০ এপ্রিল) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এই মর্মে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সংশ্লিষ্টদের বরাবর। উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই অনুমতিপত্রে জানানো হলো, সাফটাভুক্ত দেশ থেকে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত ১০টি ছবি বছরে আমদানি করা যাবে। বিপরীতে সমান সংখ্যক বাংলাদেশি ছবি রফতানি করতে হবে।
তবে সেটি আপাতত দুই বছরের জন্য পরীক্ষামূলক অনুমতি দেওয়া হলো। যা আমদানি ও রফতানি করতে পারবেন বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশকগণ।
অনেকের বিরোধিতার পরেও মন্ত্রণালয় কেন ভারতীয় তথা উপমহাদেশীয় ছবি আমদানির অনুমতি দিয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও পাওয়া গেছে বাংলা ট্রিবিউন-এর হাতে আসা এই প্রজ্ঞাপনে। যেখানে বলা হয়, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেই আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দেয়। মূলত সেই সূত্রেই ১০ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে চলচ্চিত্র আমদানি ও রফতানির এই সিদ্ধান্ত পাঠায় বিএফডিসি-সহ সিনেমা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে।
যেখানে শর্ত হিসেবে বলা হয়, আমদানি করা সিনেমাগুলো দুই ঈদ ও দুর্গাপূজার সপ্তাহে বাংলাদেশের কোনও প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শক করা যাবে না। এর বাইরে সারা বছরই ছবিগুলো উন্মুক্ত রাখা যাবে দেশের প্রেক্ষাগৃহে।
শর্তে আরও রয়েছে, ছবিগুলোতে সাবটাইটেল থাকতে হবে এবং সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র নিতে হবে।
‘পাঠান’ আমদানিকারক অনন্য মামুন
‘পাঠান’ আমদানিকারক অনন্য মামুন
সম্প্রতি হিন্দি ছবি ‘পাঠান’ ভারতের সঙ্গে একই সময়ে (২৫ জানুয়ারি) দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের আবেদন করে নির্মাতা-প্রযোজক অনন্য মামুনের অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট। মূলত সেই দাবির সূত্র ধরেই একজোট হয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সমিতি। দাবি জানায় একই সুরে। তারই বাস্তবায়ন ঘটলো এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে।
ধারণা করা হচ্ছে, ‘পাঠান’ ছবির মাধ্যমেই দেশীয় সিনেমা শিল্পের নতুন এই মেরুকরণের যাত্রা হতে যাচ্ছে। কারণ, ছবিটি হাতে নিয়ে বসে আছেন আমদানিকারকরা। যদিও তিন মাসের ঝড় শেষে প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে আলোচিত ছবিটি সবার জন্য উন্মুক্ত এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইম-এ!
প্রসঙ্গত, এতদিন ভারতীয় বাংলা ছবির ক্ষেত্রে এই বিনিময় প্রথা প্রচলিত ছিল। যা শুরু থেকেই মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। টলিউডের একটি ছবিও চলেনি ঢালিউডের প্রেক্ষাগৃহে। এবার দেখার পালা বলিউডের ছবি কতোটা হজম করতে পারে ঢালিউড।
বলা দরকার, এর আগে ২০১৫ সালে হিন্দি সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’ আমদানির বিপক্ষে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ঢালিউডের শীর্ষ তারকারা। সে সময় কাফনের কাপড় পরে রাজপথে নেমে মিছিল পর্যন্ত করেছিলেন শাকিব খান, মিশা সওদাগর, ওমর সানী, পরীমণিসহ প্রথম সারির নির্মাতা-শিল্পীরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন