মৃত্যু ঘনিয়ে আসার ব্যাপারে যেন জানতেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। তাই মৃত্যুর কিছু সময় আগে ইসমাইল হানিয়া বলেছিলেন, যদি এক নেতা চলে যায় তবে আরেকজনের উত্থান ঘটবে।
গত মঙ্গলবার ইরানের রাজধানী তেহরানে যান ইসমাইল হানিয়া। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিনের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এরপর ওইদিন স্থানীয় সময় রাত ২টা নাগাদ হত্যার শিকার হন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান হানিয়া। এ সময় তার এক দেহরক্ষীও নিহত হন।
ইরানের তেহরানে নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে হামাস প্রধান কথা বলেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে। সেখানে জীবন, মৃত্যু, অমরত্ব এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে কোরআনের এক আয়াত পাঠ করে হানিয়া বলেছিলেন, আল্লাহ জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু সম্পর্কে অবগত। যদি এক নেতা চলে যায় তবে আরেকজনের উত্থান ঘটবে। খবর রয়টার্স।
খামেনির সঙ্গে হানিয়ার এই কথোপকথন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার হয়েছে। সেখানে হানিয়া কথা বলেন তার ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে যা তার নিজ জীবন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের যুদ্ধের রূপ কেমন হবে তার আকার অনেকাংশেই নির্ধারণ করেছে। হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদে ইয়াসিন সম্পর্কেও সেখানে বলেন হানিয়া। ১৯৮০-এর দশকে ইয়াসিন তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল বলেও জানান ইসমাইল হানিয়া। বন্দি করার পর ২০০৪ সালে ইয়াসিনকে হত্যা করে ইসরায়েল সরকার। তবে হামাসের শক্তি বৃদ্ধি থেমে যায়নি।
ইসরায়েলি দখলদারিত্ব থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক কূটনীতি ব্যর্থ হলেও লড়াই চালিয়ে গেছেন হানিয়া ও হামাসের বাকি নেতৃত্ব। গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে হামাসের মুখপাত্র হয়ে উঠেছিলেন ইসমাইল হানিয়া। এ যুদ্ধে ইসরায়েলি বিমানহামলায় হানিয়ার তিন ছেলে- হাজেম, আমির, মোহাম্মদ এবং চার নাতি-নাতনি নিহত হন। গাজা যুদ্ধে তার বর্ধিত পরিবারের অন্তত ৬০ জন সদস্যও নিহত হয়েছেন।
ইরান সফরকালে হত্যার শিকার হয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন এই হামাস নেতা। তার হত্যার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেছেন, হানিয়ার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়া তেহরানের কর্তব্য।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন