গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট ক্ষোভের জেরে জর্ডানের মধ্যপন্থি ইসলামি বিরোধী দল নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক সরকারি ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ইসলামিস্ট অ্যাকশন ফ্রন্ট (আইএএফ) নতুন নির্বাচনি আইনের সুবিধা পেয়েছে। এই আইনে ১৩৮ সদস্য বিশিষ্ট পার্লামেন্টে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও উপজাতীয় ও সরকারপন্থি গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব এখনও প্রাধান্য বিস্তার করছে।
রয়টার্সের পাওয়া প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবং স্বাধীন ও সরকারি সূত্রের নিশ্চিতকৃত তথ্য অনুসারে, আইএএফ সংশোধিত নির্বাচনি আইনের অধীনে এক-পঞ্চমাংশ আসন পেয়েছে।
আইএএফ প্রধান ওয়েল আল সাক্কা রয়টার্সকে বলেন, জর্ডানের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে। এই নতুন পর্ব আমাদের জন্য দায়িত্ব বাড়াবে, যা আমাদের জাতি ও নাগরিকদের প্রতি আরও দায়িত্বশীল করবে।
এই নির্বাচন জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর নেতৃত্বে ধীরে চলা রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে গণতান্ত্রিকীকরণের একটি ছোট ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজা দেশের সীমান্তে চলমান সংঘাত থেকে জর্ডানকে রক্ষা করতে এবং রাজনৈতিক সংস্কারের গতি বাড়াতে চান।
জর্ডানের সংবিধান অনুসারে বেশিরভাগ ক্ষমতা রাজা আবদুল্লাহর হাতে থাকে। তিনি সরকার নিয়োগ করেন এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। পার্লামেন্ট অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে মন্ত্রিসভা পদত্যাগে বাধ্য করতে পারে।
ভোটের পদ্ধতি এখনও কম জনবসতিপূর্ণ উপজাতীয় ও প্রাদেশিক এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দেয়, যেখানে অধিকাংশ জনগণ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এবং ইসলামপন্থিদের শক্তিশালী ঘাঁটি।
মঙ্গলবারের নির্বাচনে জর্ডানের ৫১ লাখ ভোটারের মধ্যে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩২ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা ২০২০ সালের ২৯ শতাংশ থেকে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
জর্ডানের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজা যুদ্ধে উত্তাল পরিস্থিতি ও অন্যান্য আঞ্চলিক সংঘাতের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা দেশের তুলনামূলক স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করে।
১৯৪৬ সাল থেকে মুসলিম ব্রাদারহুডকে জর্ডানে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে আরব বসন্তের পর দলটি সন্দেহের মুখে পড়ে, যখন ইসলামপন্থিরা বিভিন্ন আরব দেশে ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে।
গাজায় হামাসের প্রতি সমর্থনে ইসলামপন্থিরা জর্ডানে ব্যাপক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে, যা তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর অন্যতম কারণ বলে বিরোধীরা দাবি করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন