বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে চলা আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করছে।
মঙ্গলবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, শিক্ষার্থীদের সহিংস বিক্ষোভের পর দেশব্যাপী স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ। এতে ছয়জন নিহতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর আগে, সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি আহত হন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে কোটা-বিরোধী সহিংস বিক্ষোভে নিহত ৫। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থী মঙ্গলবার রাজপথে বিক্ষোভ করছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দেশের প্রধান প্রধান মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে। সোমবার রাতে রাজধানী ঢাকার কাছের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতায় কয়েক ডজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, শিক্ষার্থী কোটা-বিরোধী আন্দোলনে অন্তত ৫ জন নিহত। সরকারি চাকরির জন্য কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার বিক্ষোভে সমাবেশে শতাধিক আহতের পর মঙ্গলবার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী দ্বিতীয় দিনের মতো দেশব্যাপী বিক্ষোভে যোগ দেয়।
এছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজ, তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি, ভারতের ইকোনমিক টাইমস, সৌদি আরবের আরব নিউজ, ভারতের এনডিটিভি, ব্রিটেনের বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিশ্বের প্রভাবশালী অন্যান্য সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের চলমান আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় খবর প্রকাশ করেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন