ড. আবদুল লতিফ মাসুম
আওয়ামী লীগ নেতারা প্রায়ই অভিযোগ করতেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী প্রাণ হারাবে। সেটি ছিল একটি নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতা বদলের প্রেক্ষাপটের আশঙ্কা। কিন্তু সেই নিয়মতান্ত্রিক পথে আওয়ামী লীগের পতন ঘটেনি। একটি অসম্ভব রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব বিপ্লবে শেখ হাসিনা পলায়ন করেন।
আওয়ামী লীগ সবসময়ই রাজনীতিকে রাজনৈতিক উপায়ে মোকাবেলা না করে নির্মম শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করেছে। বাংলাদেশের গত ৫৪ বছরের ইতিহাসে এত রক্তপাত আর ঘটেনি। বিশেষত ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময়কালে যে নিষ্ঠুরতা, নির্মমতা ও নৃশংসতার পরিচয় তারা দেয় তাতে বিজয় পরবর্তীকালে রক্তপাত অস্বাভাবিক ছিল না। শেখ হাসিনা নির্মমতার সাথে সাথে প্রতারণা কৌশল অবলম্বন করে মায়াকান্না দেখান। অঘটন-ঘটন-পটিয়সী এই নারীর আদেশে শেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৭৫ মানুষের প্রাণ গেছে। এ ছাড়া অভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন ২০ সহস্রাধিক মানুষ। অনেকে চক্ষু হারিয়েছেন। অনেকে নিজ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারিয়ে চিরকালের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।
পুলিশ বাহিনীকে নির্মম গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছেন। যে র্যাব গঠিত হয়েছিল সন্ত্রাস থেকে জনগণের জীবন রক্ষার জন্য, সেই র্যাবকে তিনি ব্যবহার করেছেন জনগণের জীবন নেয়ার জন্য। সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবিকে রাজপথে নিয়ে এসেছেন গদি রক্ষার জন্য। অবশেষে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকতে চেয়েছেন। সেনাবাহিনী প্রধানের গণমুখী ও কুশলী সিদ্ধান্তের কারণে দেশ আরো রক্তপাত থেকে রেহাই পেয়েছে। বিক্ষুব্ধ লাখ লাখ মানুষ গণভবনে অথবা অন্যত্র যেভাবে তাদের ক্রোধের প্রকাশ ঘটিয়েছে সেখানে পরবর্তীকালে রক্তপাত ঘটেছে খুব কম ক্ষেত্রেই। যেখানে তাদের আশঙ্কা ছিল লাখ লাখ মানুষের সেখানে মৃতের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায়। জনগণ বিপ্লবের নেতা শিক্ষার্থী-সমন্বয়কারীদের আবেদন রক্ষা করেছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সহনশীলতার আবেদন জানিয়েছিলেন। বিপ্লবী সরকার তথা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের আকুল আবেদনে মানুষ সাড়া দিয়েছে। আইন তারা নিজের হাতে তুলে নেয়নি। ১৭ বছরের আঘাতের প্রতিঘাত করেনি মানুষ। হিংসার বদলে প্রতিহিংসা প্রদর্শন করেনি জনগণ।
জনগণের বিপ্লবের মোকাবেলায় তিনি পলায়ন করেছেন। তাদের শত শত নেতাকর্মীও নির্ভরতার দেশে পলায়ন করেছেন। অনেকে অবশ্য সেই পলায়ন পথে হেস্তন্যস্ত হয়েছেন। অন্যেরা মুজিব কোট খুলে লুঙ্গি পরেছেন। কেউবা আবার দাড়ি কামিয়ে জনতার আক্রোশ থেকে রক্ষা পেতে চেয়েছেন। বড় বড় ডাকসাইটে নেতা গর্তে ঢুকে পড়েছেন। আওয়ামী লীগের শতভাগ নেতাকর্মী গা-ঢাকা দিয়েছেন। জনরোষ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাজার-হাট ও লোকালয়ে আসছেন না। এই যখন মাসখানেক ধরে আওয়ামী লীগের অবস্থা তখন গোপালগঞ্জের খবর কী?
গোপালগঞ্জ কী বাংলাদেশের বাইরে! গোটা বাংলাদেশের যে ওলট-পালট হয়ে গেল, তার খবর কী সেখানে পৌঁছায়নি! সেখানে কী এখনো আওয়ামী তালুকদারি বহাল আছে? সেখানে কী এখনো আওয়ামী লীগের নিপীড়ন-নির্যাতনে নিষ্পেষিত হতে হয়? গোপালগঞ্জ কী স্বাধীন হয়নি! আমরা জানি গত ১৫ বছর ধরে গোপালি রাজত্ব চলছে। মনে পড়ে ১৫ বছর আগে ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে যখন প্রথমবারের মতো নিগ্রহের শিকার হতে হয়, ঘর থেকে বের হতে বাধা দেয়া হয় তারা ছিল গোপালি। অন্য জায়গার মানুষকে আওয়ামীদের বিশ্বাস হয়নি। পুলিশে নিযুক্তির ক্ষেত্রে ছিল গোপালগঞ্জের নিরঙ্কুশ আধিপত্য। একই তথ্য আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে। বড় বড় উঁচু পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও তারাই অগ্রাধিকার পেতো। গোপালগঞ্জের হলে সাত খুন মাফ। এরকম অসংখ্য উদাহরণ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। সম্ভবত এ কারণে গোপালগঞ্জবাসী এখনো ঘণঘোরে আছে। তারা আঁচ করতে পারছেন না, আওয়ামী সন্ত্রাসের যুগ শেষ হয়েছে। নইলে তারা এমন ঔদ্ধত্য দেখালেন কিসের জোরে? তারা হয়তো বিশ্বাস করে আসছেন, তাদের আপা শিগগিরই ফিরে আসবেন। অবশ্য তাদের আপাও পাগলের প্রলাপ বকছেন। আওয়ামী লীগ অন্যায় অপকর্ম করে ২১ বছর পরে হাতে তসবিহ আর মাথায় পট্টি পরে ক্ষমতায় এসেছিল। এবার তাদের অন্যায় ও রক্তপাতের পাল্লা এত ভারী যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মনে করেন, আগামী ৪২ বছরেও তাদের ক্ষমতাসীন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ গোপালগঞ্জে যা ঘটেছে তা আওয়ামী রাজত্বেও কল্পনা করা যায়নি। সেই ঘটনায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আলী দিদার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়- বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার বেদগ্রাম মোড়ে বিএনপির একটি পথসভা শেষে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হয়। ঘোনাপাড়া এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২০০-৩০০ নেতাকর্মী মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে, গাড়ি ভাঙচুর করে এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্তত ৫০ নেতাকর্মী আহত হন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন সংবাদপত্রকে বলেন, আমরা বেদগ্রামের মোড়ে শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষ করে এস এম জিলানীর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলাম। ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছলে গোপালগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আওয়ামী নেতাকর্মীরা গাড়িবহরে হামলা চালায়। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া এলাকার এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় ঘোনাপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধুও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। তাদের বাধা দিলে আমাদের ওপর হামলা করে।
এই ঘটনাটি শোনার পর আমাদের অনেকেরই ধারণা ছিল, বিষয়টি হয়তো ব্যক্তিক অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সভাপতির ভাষ্য মোতাবেক জানা গেল, বিষয়টি রাজনৈতিক। বঙ্গবন্ধুর ও শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অপরাধে বিএনপির এক নেতাকে যদি তারা মেরে ফেলার ঔদ্ধত্য দেখায় তাহলে ঢাকায় এবং দেশের সর্বত্র সংঘটিত এ ধরনের ঘটনায় তাদের কত লাখ লোককে মেরে ফেলা প্রয়োজন! গোপালগঞ্জের এই অর্বাচীন নেতারা নিজেদের অজান্তেই এই জাতির ক্রোধের সম্মুখীন হলেন। ইংরেজি প্রবাদটি এ রকম- Where intelligent fears, fools rushes. নির্বুদ্ধিতার পরিণাম ভালো হয় না। তারা যে রাজনৈতিক নির্বুদ্ধিতা ও দুঃসাহসের জানান দিলো তার উৎসমূল খুঁজে বের করা দরকার। দীর্ঘ ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ মানুষদেরকে যে এভাবেই অমানুষ বানিয়েছে তার নিকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় এই ঘটনায়।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে এই ঘটনাটি নতুন নয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে জানানো হয়, গোপালগঞ্জে তাদের হামলায় টহলরত ৯ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। ১০ আগস্ট ২০২৪ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে এ ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই দিন বিকেলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর দু’টি টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের আঘাত করে। এতে তিন সেনা কর্মকর্তা, একজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও পাঁচজন সেনাসদস্য আহত হন। আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় ও দু’টি গাড়ি ভাঙচুর করে।
পরপর দু’টি ঘটনা কী প্রমাণ করে? সেখানের আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বহাল তবিয়তেই তাদের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে কী প্রতীয়মাণ হয় না! তাদের এই আস্ফালন অস্বাভাবিক কিন্তু অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। তত্ত¡গতভাবে এর উৎসমূল হিসেবে তাদের অনুসৃত নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই তত্ত্ব কথার পর বাস্তবতা হচ্ছে এই যে প্রথমত বিগত ১৫ বছরে তিনি যে মিথ্যা মিথ তৈরি করেছেন যে তার কুবুদ্ধির সাথে পেরে ওঠার লোক বাংলাদেশে নেই। সেটিই গোপালগঞ্জের লোক হয়তো বিশ্বাস করে।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তিনি দেশের কাছেই আছেন, যাতে চট করে ঢুকে পড়তে পারেন। এক পর্যায়ে তানভীর জানতে চান, শেখ হাসিনাকে ভারতের গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করা হয়েছে কি না? শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কিন্তু আমাদের দেশের খুব কাছাকাছি আছি। অত দূরে নাই কাছাকাছি আছি, যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’ তানভীর দলীয় নেতৃত্ব গোছানোর বিষয়ে অনুমতি চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, ‘এখন দেশে গেলে দেবেনে একখানা মামলা। পরে কিছুই করতে পারবা না। আমার নামে ১১৩টি মামলা। আমার পরিবারের কেউ বাকি নেই। এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘকে জানাতে হবে।’ এ ধরনের বেসামাল সংলাপ বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের মতো অন্ধ আওয়ামী লীগারদের উসকে দেয়ার প্রয়াস মাত্র। ভারত থেকে এ ধরনের সংলাপ তথা অপচেষ্টায় বাংলাদেশের মানুষ রীতিমতো ক্ষিপ্ত। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সঙ্গতভাবেই বলেছেন, ‘জনরোষে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার চুপ থাকা উচিত।’ শেখ হাসিনার সেখানে অবস্থান ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ক্ষোভকে ক্রমাগত বাড়িয়ে দেবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। কূটনীতিকরা মনে করেন, ভারতও তার অবস্থানে এবং কার্যকলাপে বিব্রত। কিন্তু অন্যত্র কোনো ব্যবস্থা না হলে ভারতের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে তাকে দিল্লি থেকে বের করে দেয়া ভারতের পক্ষে সঙ্গত নয় বলে আওয়ামী বন্ধুরা মনে করে।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের পর এমনিতেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। সেখানে শেখা হাসিনার ভারতে উপস্থিতি সম্পর্কের মধ্যে কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। এমন মন্তব্য ভারতীয় বিশ্লেষকদের। তাছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে ইস্যু তৈরি করে বাংলাদেশের ওপর অন্যায় চাপ সৃষ্টির অপকৌশল চলছে। কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে মোদি প্রফেসর ইউনূসের কাছে প্রেরিত অভিনন্দন বার্তায় সংখ্যালঘুর বিষয় উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে চক্রান্ত বহাল আছে বলে প্রতীয়মাণ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। গত সপ্তাহে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরাইল-হামাস সঙ্ঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতির উল্লেখ করে সশস্ত্রবাহিনীকে ভবিষ্যৎ যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। এটি তার কোনো রাজনৈতিক বক্তৃতা ছিল না, বরং সশস্ত্রবাহিনীর কমান্ডারদের যৌথ সম্মেলনের নির্দেশিকা। সুতরাং গোপালগঞ্জের লোকদের ঔদ্ধত্যের উৎসমূল কোথায় তা খুঁজে পাওয়া কঠিন কিছু নয়।
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনাকে দেশী-বিদেশী চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, অবৈধ আওয়ামী শাসনামলে এই সন্ত্রাসীরা অনেক কালো টাকা উপার্জন করেছে, সেই কালো টাকা তারা এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাজে লাগাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয় মেনে নিতে পারছে না বলেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এ জন্যই বিএনপি এবং অন্য সমমনা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীসহ জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে খুন ও তাদের গুরুতর জখম করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে দুষ্কৃতকারীরা এস এম জিলানীর গাড়িবহরে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে খুন ও জিলানীসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ঘটনা একটি গভীর দেশী-বিদেশী চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ। তিনি আরো বলেন, এসব সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন করার কোনো বিকল্প নেই। হামলা ও রক্তাক্ত পথ অনুসরণ করে ষড়যন্ত্রকারীরা যেন ফায়দা হাসিল করতে না পারে সে জন্য ছাত্র-জনতাসহ সব গণতন্ত্রমনা মানুষকে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে হবে। তবেই দেশ থেকে ষড়যন্ত্রকারী ও দুষ্কৃতকারীদের মূলোৎপাটনসহ দেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা, প্রকৃত গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন