বদরুদ্দীন উমর একজন রাজনীতিবিদ, লেখক-গবেষক ও মার্ক্সীয় তাত্ত্বিক। তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি। বাংলা-ইংরেজিসহ প্রায় ১২৪টি গ্রন্থ রয়েছে তাঁর। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
এ অঞ্চলে তো আগেও বেশ কয়েকটি গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। প্রথম গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল ১৯৫২ সালে, ১৯৬৯ সালে, ১৯৭১ সালের মার্চে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক, গভীর এবং শাসকদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের এ গণ-অভ্যুত্থান। এর কারণ হচ্ছে, জনগণের ওপর ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে নির্মম নির্যাতন ও শোষণ করা হয়েছে। আর শোষণের চেয়ে নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রবল ও শক্তিশালী হয়। নির্যাতন কোনো স্বাধীন ক্যাটাগরি না হলেও, শোষণের জন্য এর দরকার হয়।
শেখ হাসিনার আমলে খুব সুসংগঠিতভাবে শোষণ ও নির্যাতন করা হয়েছে। এই নির্যাতনের একটা কারণ ছিল—এই সরকার চরমভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত, গণবিরোধী ছিল। এরা চারদিকে যে শুধু শোষণ করেছে তা-ই নয়, লুটপাটও করেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা লুট করেছে। এই কাজ করতে গিয়ে তারা জনগণের ওপর নির্যাতন করেছে। জনগণের মুখ বন্ধ করেছে। ঢাকা শহরে লেখক থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এবং গ্রামের লোকের টুঁটি চেপে ধরেছে। তাদের বিরোধী বক্তব্য দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল।
আর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু লিখলে বা বললে তা খবরের কাগজে ছাপাত না। শুধু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লেখা যেত। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছুই বলা যেত না। এই অভ্যুত্থানের পর সরকারপ্রধান দেশ ছেড়ে পালালেন। পৃথিবীতে আরও কিছু দেশে অভ্যুত্থান হয়েছে, এমনকি আরব বসন্ত যে হয়েছে, তিউনিসিয়া থেকে মিসর—কোথাও কিন্তু শাসক পালিয়ে যাননি। মিসরের হোসনি মোবারক পালাননি। ইতিহাসে একমাত্র পালিয়েছিলেন কিউবার বাতিস্তা।
এভাবে একটা দলের প্রধান নেতারা পালিয়ে গেছেন, তা তো পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটেনি। এসব তো অকারণে ঘটেনি, তা তো বুঝতে হবে। যে পরিমাণ নির্যাতন করা হয়েছে, তার সমতুল্য প্রতিক্রিয়া এটাই হওয়ার কথা ছিল। এখানে একদিকে যেভাবে লুটপাট ও নির্যাতন হয়েছে ওপর তলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত। সে জন্য এর প্রতিক্রিয়াটাও হয়েছে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত এবং শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। এই দিক দিয়ে বাংলাদেশে এর আগে যত অভ্যুত্থান হয়েছে, সবগুলোর থেকে এই অভ্যুত্থান ব্যাপক, গভীর ও শক্তিশালী।
বাংলাদেশে বারবার স্বৈরাচারী শাসন আসে কেন?
স্বৈরাচার তো ভারত, পাকিস্তানেও আছে। সেটা শুধু তো বাংলাদেশের ব্যাপার না। এখানে একটা শোষক শ্রেণি আছে। শোষক শ্রেণির নির্যাতন যেখানে আছে, সেখানে নির্যাতনের একপর্যায়ে স্বৈরতন্ত্র আসে। নির্যাতন সব সময় একটা সমাজে থাকে। কিন্তু নির্যাতন বাড়তে বাড়তে যখন সেটা একটা উচ্চপর্যায়ে যায়, যখন দমন-পীড়নের প্রয়োজন বেশি পড়ে, তখন স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায়।
বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র ’৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবের আমলে দেখা গেছে। যে মানুষটাকে দেশের এত মানুষ সমর্থন করেছিল, তিনি রক্ষীবাহিনী সৃষ্টি করে গ্রাম পর্যন্ত অনেক মানুষকে হত্যা করেছিলেন।
’৭২ সালেই নিজ দলের মধ্য থেকে জাসদের সৃষ্টি হলো। এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার। জাসদ গঠনের পর তিনি নিজ দলের লোকদের ওপর আক্রমণ করলেন। তিনি যে এই অবস্থা সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাঁর চারপাশে যেসব দুর্বৃত্ত ছিল—তারাই লুটপাট ও নির্যাতন করেছিল। এ ধরনের নির্যাতন ব্যাপকভাবে বাড়ার কারণে তাঁর জনপ্রিয়তার অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, তিনি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন। যদি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন না হতেন, তাহলে সামরিক বাহিনীর ক্রিমিনালরা তাঁকে হত্যা করার সাহস পেত না।
তাই স্বৈরাচার ব্যাপারটি শোষণব্যবস্থা থেকে এসেছে। এই শোষণ যত তীব্র হচ্ছে এবং এই শোষণকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্যাতনের দরকার হচ্ছে। নির্যাতনটা আলাদা কোনো ব্যাপার না। এটা শোষণের ওপর নির্ভরশীল। তাই শোষণের সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতন হচ্ছে। আর এই শোষণের জন্য বাংলাদেশে শোষক শ্রেণি আছে। বাংলাদেশে বুর্জোয়া শ্রেণির মধ্যে নিকৃষ্ট হলো ব্যবসায়িক শ্রেণি। তবে শিল্প বুর্জোয়া হলো এদের চেয়ে ভালো। এখানে শিল্প বুর্জোয়া যারা আছে, তারাও কিন্তু ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত। আগে ব্যবসায়ী তার পরে শিল্পমালিক।
এখানকার ব্যবসায়িক বুর্জোয়া এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে। আমি ’৭২ সাল থেকে লিখে আসছি, এখানে ব্যবসায়িক বুর্জোয়ারা সব কিছু দখল করে রেখেছে। বাংলাদেশ এখন ব্যবসায়িক বুর্জোয়াদের শাসনে চলে গেছে।
২০২৪ সালে যে নির্বাচন হলো, সেখানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সরাসরি ব্যবসায়ী। বাকি যাঁরা আছেন তাঁরাও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাহলে এই ব্যবসায়িক শ্রেণিটা হলো বাংলাদেশের মূল শাসক শ্রেণি। এরাই দমন-পীড়ন ও নির্যাতন করছে। সেই শাসক শ্রেণি শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা—সবই তো একই শ্রেণির। তাঁদের সবার কর্মতৎপরতা একই রকম। তাই এখানে স্বৈরশাসন ঘুরে ঘুরে যে ফিরে আসছে সেটাই শুধু নয়, স্বৈরশাসন অল্প-বিস্তর বরাবরই থেকেছে। কারণ, এখানে যে শ্রেণিশাসন করেছে, সেই শ্রেণির দমন-পীড়ন করা ছাড়া তাদের শোষণ টিকিয়ে রাখার অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।
অন্য গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে এবারের গণ-অভ্যুত্থানের পার্থক্য কী?
এখানে বিএনপিসহ যেসব পার্টি ছিল তাদের সবাইকে নির্যাতন করে শেখ হাসিনা অকেজো করে দিয়েছিল। বিএনপির একটা জনভিত্তি আছে। কিন্তু জামায়াত, জাতীয় পার্টি ও সিপিবির সেই অর্থে জনভিত্তি নেই। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ করে এমন অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল যে তাঁরা কোনো সক্রিয় নির্ধারক ভূমিকা পালন করতে পারেননি।
এখানে যে গণ-অভ্যুত্থানটা হলো, সেটার ক্ষেত্র প্রস্তুত ছিল। সেটা যদি না থাকত, তাহলে শুধু কোটা আন্দোলন দিয়ে জনগণকে এভাবে উদ্দীপ্ত করা সম্ভব ছিল না। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ থেকে প্রতিরোধের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট পার্টি ছিল না। তাই কোটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করল। আর শেখ হাসিনা তাঁর ঔদ্ধত্য এবং দম্ভের কারণে যেভাবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কথাবার্তা বললেন, তাতে ছাত্র আন্দোলন আরও শক্তিশালী হলো। সেটাই স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি করল। জনগণের মধ্যে যে বিক্ষোভ ছিল, সেটা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভ্যুত্থান ঘটল। এই আন্দোলনে তো কোনো রাজনৈতিক দলের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তারা সমর্থন করেছে, কিন্তু কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এ কারণে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এটা যদি একটা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হতো, তাহলে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করতে পারত। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তো সেই অবস্থান নেই। তারা যতই একটা বড় আন্দোলন করুক না কেন, তাদের তো জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নেই।
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কথা বলছেন। কিন্তু এ সরকারের তেমন তো শক্ত ভিত্তি নেই। এ সরকার কোনো ফেরেশতাদের সরকার না। কিন্তু এটা তো বুঝতে হবে যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, সে জায়গায় কে কাজ করবে? সেই শূন্যতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। তা না হলে তো ক্ষমতা গ্রহণ করত সামরিক বাহিনী। তারা যে ভালো না—এসব বলা ঠিক হবে না এখন। তারা একটা ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের দুর্বলতা নিয়ে কথা অবশ্যই বলতে হবে। কিন্তু তাদের দায়িত্ব নেওয়া ঠিক হয়নি—এসব কথা তো বলা ঠিক হবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারেনি। এর কারণ কী?
’৭২ সাল থেকে ব্যবসায়ী শ্রেণি আজ পর্যন্ত তাদের শক্তি সংহত করেছে। সব জায়গায় তারা রয়েছে। তারা পার্লামেন্ট থেকে সর্বত্র বিরাজমান। অন্যভাবে বলা যায়, যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে কোনো ধরনের প্রতিনিধিত্ব না করে খোদ নিজেরাই শারীরিকভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি সবাই কিন্তু শোষক শ্রেণিরই রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনা তো এই ব্যবসায়িক শ্রেণির প্রতিনিধি ছিলেন। এখন হাসিনা চূড়ান্ত একটা পর্যায়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। কিন্তু যে শ্রেণি তাঁকে ক্ষমতায় রেখেছিল, তারা তো এখন বহাল তবিয়তে আছে। এই ব্যবসায়ী শ্রেণি কিন্তু এখনো বহাল আছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখানকার অর্থনীতিবিদেরা অনেক কথা বলছেন। আমার কথা হলো, এই যে দ্রব্যমূল্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না এবং মূল্য আরও বাড়ছে—এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পণ্ডিতরা যে নানা ধরনের কথা বলছেন, পণ্ডিতদের এসব কথা শুনে আমার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জুতা আবিষ্কারের কথা মনে হচ্ছে। একটা সমস্যার আসল রূপ বুঝতে না পেরে, তারা নানা ধরনের কথা বলছেন। অনেকে আসল কথাও বলতে চান না।
এখানে দ্রব্যমূল্য সম্পূর্ণ কমানো না গেলেও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, তার একমাত্র উপায় হচ্ছে রেশনিংব্যবস্থা চালু করা। ব্যবসায়ীরা কোনো উপদেশ শুনবেন না। আর সরকারেরও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো জোর করার সুযোগ নেই। কিন্তু সরকার নিজে রেশনিং চালু করতে পারে। ঢাকায় যদি এটা চালু করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে পারবেন না।
সংবিধান সংস্কার নাকি পুনর্লিখন—কোনটা করা যৌক্তিক মনে করেন?
এই সংবিধান সংস্কার করার কিছু নেই। ১৯৭২ সালে এ সংবিধান শেখ মুজিবুর রহমান চতুর্থ সংশোধনী করে শেষ করে দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক কিছু উপাদান এ সংবিধানে থাকলেও ’৭৫ সালে তার অবশিষ্ট সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।
এরপরে জিয়াউর রহমান ও এরশাদ ধর্ষণ করেছেন। তবে খালেদা জিয়ার আমলে তেমন কোনো সংস্কার হয়নি। এরপর শেখ হাসিনাও সংবিধানকে ধর্ষণ করেছেন। সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্ষণ করে এটাকে এমন অবস্থায় এনেছেন যে এখন সংবিধান অজ্ঞান অবস্থায় আছে।
তাই সংবিধানের চেতনা কোনো ইনজেকশন দিয়ে ফেরানো যাবে না। আসলে দরকার হলো, এটাকে সম্পূর্ণভাবে ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান ছাড়া এর কোনো বিকল্প নেই। আর নতুন যে সংবিধান হবে, সেটা যে জনগণের হবে সেটাও মনে করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু নতুন সংবিধানকে এমন একটা সংবিধান হতে হবে, সেটা কার্যকর হতে হবে।
পরিবর্তনের আশা কি রাখতে পারছেন?
সবকিছু সুষ্ঠুভাবে চলবে—এ ধরনের আশা করা ঠিক হবে না। সমাজের মধ্যে একধরনের নৈরাজ্য থেকেই যাবে। কারণ, সমাজের মধ্যে পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য কোনো সংগঠন নেই। তবে কথা হচ্ছে, এর পরে নির্বাচিত সরকার হলেও তারা তখন তাদের শ্রেণি অবস্থান থেকে কাজ করবে।
কিন্তু পরিবর্তনের আশা তো ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এভাবে তো চিরকাল চলতে পারে না। সব সময় সমাজ পরিবর্তনের মধ্যে থাকে। কিন্তু বড় কোনো পরিবর্তন অল্প দিনের মধ্যে হবে না, যেটা মানুষের জীবনে বড় কোনো পার্থক্য সৃষ্টি করবে। তবে দূর ভবিষ্যতে এই পরিবর্তন অবশ্যই হতে হবে। এই আশা ব্যক্ত না করার অর্থ হলো মানুষের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলা। আর মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলা তো ঠিক কাজ হবে না।
আজকের পত্রিকা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন