পারভীন হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। বর্তমানে সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন। প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রাজনীতির মেরুকরণ, সমাজের পালাবাদল, উচ্চশিক্ষার নানা সংকট, নারীর সাফল্য ও ক্ষমতায়নসহ ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নিয়ে নানা আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাফসান গালিব
নতুন বছর শুরু হলো। একটা করোনা মহামারি গেল। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত সইতেও হচ্ছে। সামনের বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছেন?
পারভীন হাসান: করোনা মহামারি আমরা বেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি বলা যায়। হ্যাঁ, আমাদের অনেক দুর্বলতা, অব্যবস্থাপনা ও ত্রুটি ছিল। তবে যেভাবে ধারণা করা হয়েছিল, খুবই খারাপ পরিস্থিতি হবে, সেটি হয়নি, যেমনটি আমরা পার্শ্ববর্তী দেশে দেখি। তবে সামনের বাংলাদেশে নতুন আরও মহামারির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদেরও ভুগতে হয়েছে। এখনো ভুগতে হচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক খাতে নানাভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। যেটি সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও যেভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমি আশাবাদী।
আমরা মিছিলগুলোতে লাঠিসোঁটা হাতে অনেক তরুণকে দেখি, অনেক শিক্ষার্থীকে দেখি। তরুণেরা যে রাজনীতিতে একেবারেই আকৃষ্ট হচ্ছে না, তা নয়। কিন্তু উদ্দেশ্যটা ভিন্ন। রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যবহার করছেন। একটা সময় মেধাবী শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে যুক্ত হতেন। এখন সেটি দেখা যায় না। কারণ, এখনকার রাজনীতিতে কোনো আদর্শ নেই, কোনো রোলমডেলও নেই, যাঁদের দেখে তরুণেরা অনুপ্রাণিত হবে। তবে তরুণেরা রাজনীতির বাইরে নানা ক্ষেত্রে ভালো করছে, দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে
সামনের বছরের শুরুতে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ফলে এ বছর রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আপনার কী মনে হয়?
পারভীন হাসান: আমাদের দেশে নির্বাচন এলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কমবেশি উত্তপ্ত থাকেই। এটি নতুন কিছু নয়। তবে এবার যে রকম দেখছি, সরাসরিভাবে বলা হচ্ছে—হাত ভেঙে দেব, পা ভেঙে দেব, পাল্টাপাল্টি নানা হুমকি চলছে, কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ; তাহলে তো পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত হতেই হয়। রাজনৈতিক পক্ষগুলোর উচিত নিজেদের ভাষায় সংযত হওয়া। নয়তো হানাহানি বাড়বে। আমি চাইব এ রকম পরিস্থিতি না হোক।
সমঝোতাহীন রাজনীতি বা অসহিষ্ণুতার অবসান কীভাবে হতে পারে? একটু সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখতে পারি কি না?
পারভীন হাসান: এই স্বপ্নই তো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বপ্ন তো সব সময় দেখি। কিন্তু সেটি তো স্বপ্নই। বাস্তবে সেটি আদৌ হয় কি না, তা হচ্ছে কথা। কারণ, গণতন্ত্রের অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে অন্যের কথা শোনা। অন্যের গঠনমূলক সমালোচনা করা এবং সেটি নেওয়ার মতো সহ্যক্ষমতা ও ধৈর্য থাকা। রাজনৈতিকভাবে তো এই চর্চা আমরা দেখি না। রাজনীতিতে সমঝোতা আনার জন্য এটি আমি জরুরি মনে করি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ছিল। সে অনুযায়ী সংবিধানেও চার মূলনীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, তা থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে আছি?
পারভীন হাসান: আমরা অনেক অনেক পিছিয়ে আছি। দেশে যদি সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হতো, তাহলে আমরা তো শিশুশ্রম দেখতাম না। এখনো নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকতে হয়। এখনো সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর হয়নি। মানুষ নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সংবিধানের এসব মূলনীতি প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ও সরকারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তা আমরা দেখি না। ফলে সমাজে মানুষের মধ্যে মানবিকতার বিষয়গুলোও কমে গেছে। যেমন একটা উদাহরণ দেওয়া যায়, আমাদের শিক্ষাজীবনে আমরা কখনো একটি রিকশায় তিন-চারজন উঠিনি। এখন সেটি হরহামেশা দেখা যায়। একজন রিকশাওয়ালার কষ্টের কথা আমরা ভাবছি না। রিকশাওয়ালাও বাড়তি কিছু অর্থ উপার্জনের জন্য বেশি মানুষ বহন করছেন।
এখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠারও ঘাটতি আছে। এমন অনেক বিষয় আছে, যেখানে আইন করে এবং এর প্রয়োগ ঘটিয়ে সমাজকে কিছুটা বদলানো যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে আইন করেও সম্ভব হয় না। কারণ, মানুষকে নিজ থেকেই পরিবর্তিত হতে হয়।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় ও রাজনীতিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কতটা ধারণ করতে পেরেছি?
পারভীন হাসান: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমি বুঝি মানুষে মানুষে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার কায়েম করা। একটু আগেও যেটি নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে অনেকে অনেক কিছু বলে থাকে। কিন্তু যেখানে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আদতে কিছু থাকে না।
গত কয়েক বছরে সাম্প্রদায়িক হামলা ছাড়াও পোশাক নিয়ে বিতর্ক, সামাজিক অসহিষ্ণুতার নানা ঘটনা আমরা দেখতে পাই। এখানে সামাজিক কোনো পালাবদল ঘটেছে বলে মনে হয় আপনার?
পারভীন হাসান: তা তো ঘটেছেই। কারণ, বাংলাদেশে তো সাম্প্রদায়িক হামলা হওয়ার কথা নয়। এরপরও তো হয়েছে বা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা একই গ্রামে, একই এলাকায়, একই পাড়ায়, একই মহল্লায় পাশাপাশি বাস করে আসছে বহুদিন ধরে, মিলেমিশে থাকছে, সেখানে হঠাৎ করে কেন সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। আমার মনে হয়, এখানে কোনো ধরনের উসকানিমূলক বিষয় আছে। এখানে অবশ্যই রাজনীতি আছে, লোভ আছে। নয়তো এমন ঘটনা ঘটার তো কথা নয়। কারণ, কিছুদিন পর তো আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়, সব ঠিকঠাকমতো চলে। আমার মনে হয় সামাজিকভাবে সোচ্চার থাকলে এমন ঘটনা অবশ্যই ঠেকানো যায়।
আর পোশাকের বিষয়ে লক্ষ করা যায়, এটিও মূলত মেয়েদের নিয়েই। এই রকম কাপড় পরতে হবে, অন্য রকম হলে চলবে না, নারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার আরেকটি কৌশল। কিছুদিন আগে এক রেলস্টেশনে পোশাকের কারণে একজন নারীকে হেনস্তা হতে হয়েছে। সেটি করেছেনও আরেকজন নারী। এখন সেটি কেন ঘটল? হেনস্তাকারী নারী মনে করেছেন, তিনি চাইলেই এতগুলো মানুষের সামনে আরেকজনের ওপর হামলা করতে পারেন। এই যে মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে বা নিতে পারছে, তার মূলেও অসহিষ্ণুতা। সে মনে করেছে, একমাত্র তার চিন্তাই সঠিক। মানুষ যখন আইন, রাষ্ট্র, সর্বোপরি নিজের আস্থা হারিয়ে ফেলে, তখনই নিজের হাতে আইন তুলে নেয় এবং ধর্মের বাহ্যিক প্রকাশের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক কথা হয়। সরকারও নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী নারী। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে নারীরা ক্ষমতায়িত হচ্ছেন কি?
পারভীন হাসান: এটি স্বীকার করতেই হবে যে আগের চেয়ে নারীরা এখন অনেক এগিয়ে গেছেন। এটি শুধু শিক্ষিত হওয়ার বিষয়ে নয়, কর্মক্ষেত্রসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও। যেমন আমরা দেখছি, একেবারে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসছে আমাদের মেয়ে ফুটবল টিম, ক্রিকেট টিম। দারিদ্র্য, অপুষ্টি, সামাজিক বাধা মোকাবিলা করে গ্রামের মেয়েরা উঠে আসছে। আগে মেয়েদের পেশাজীবন বলতে ছিল শুধু শিক্ষকতা, ব্যাংকে চাকরি। কিছু কিছু সরকারি চাকরিতেও মেয়েদের দেখা যেত। এখন তো মেয়েরা সামরিক কর্মকর্তা, পাইলট, পুলিশ কত কিছু হচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। এসব দেখে খুবই ভালো লাগে। তবে পেশাগতভাবে অনেক এগিয়ে গেলেও প্রকৃতপক্ষে নারীর ক্ষমতায়ন সেভাবে হয়নি, রাজনীতিতে বা দেশ পরিচালনার শীর্ষে নারীরা থাকলেও। শিক্ষায় নারীদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। এখনো মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। পারিবারিক আইনে নারী ও পুরুষের অধিকারের মধ্যে বিরাট বৈষম্য থেকে গেছে। এখনো ধর্মের দোহাই দিয়ে মেয়েদের ওপর নানা বাধা তৈরি করা হয়। এখনো মেয়েসন্তান না হয়ে ছেলেসন্তান হলে সমাজে মানুষ
বেশি খুশি হয়। ধর্মীয় সভা-সমাবেশে নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলা হয়। ফলে সামাজিকভাবে চিন্তার উন্নতি ও প্রসার না ঘটলে, রাষ্ট্রীয় ভূমিকা না থাকলে, আইনের শাসন পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা না পেলে সহজে নারীর ক্ষমতায়ন হবে না।
বর্তমানে আপনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন। আমাদের উচ্চশিক্ষায় কোন সমস্যাকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখেন?
পারভীন হাসান: আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বড় ধরনের একটি গলদ আছে। এখানে ছাত্র এবং অভিভাবক মনে করেন যে স্কুল-কলেজ পেরোলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো পরবর্তী অপরিহার্য ধাপ। কিন্তু বিদেশে আমি দেখেছি, যাঁরা শিক্ষক হবেন বা গবেষণা করবেন অথবা বিশেষ কোনো পেশা যেমন চিকিৎসক বা প্রকৌশলী হবেন, তাঁরাই শুধু উচ্চশিক্ষা নেন। সেখানে উচ্চশিক্ষা সবার জন্য নয়। সেখানে বেসিক শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের দেশে সেটি হয় না। স্কুল বা কলেজে শিক্ষার ভিতটা মজবুতভাবে হয় না এখানে। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠলেও অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষার ভিত্তি এত দুর্বল থাকে যে উচ্চশিক্ষার বৃহৎ পরিসরে পড়াশোনা এবং তাত্ত্বিক পড়াশোনা গ্রহণ করতে পারে না। আমাদের এখানে উচ্চশিক্ষা মানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে থাকার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক মেরুকরণ। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়নের চেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনা দেখা যায়। এভাবে নিয়োগ পাওয়া একজন অদক্ষ ও কম যোগ্যতার শিক্ষক অবসরে যাওয়ার আগপর্যন্ত ক্লাসে পড়ান, প্রশ্ন তৈরি করেন, পরীক্ষা নেন। তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখবে? কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, এ দেশে সেটিই ঘটছে। আগে একসময় আমরা উপাচার্য হিসেবে অনেক জ্ঞানী, গুণী ও দক্ষ মানুষদের পেয়েছি। এখন তাঁরা সংখ্যায় কমে গেছেন। দেশে শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ হতে যেসব যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেসব যোগ্যতার মানুষ তো তৈরি হচ্ছে না। এত এত বিশ্ববিদ্যালয় তাহলে কীভাবে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পাবে? বিষয়গুলো আমার মনে হয় ভেবে দেখা উচিত।
স্বাধীনতার ৫১ বছর পর বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই সফল। কোন সফলতা বা সাফল্যকে আপনার বিশেষ মনে হয়? আরও কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সফল দেখতে চান?
পারভীন হাসান: একজন নারী হিসেবে কর্মক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে গেছে, এটিকেই আমি বড় সফলতা মনে করি। তবে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের আরও বেশি নিশ্চিত করতে হবে। শীতের মধ্যে ছিন্নমূল নারী ও শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে দেখে খারাপ লাগে। একটা দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ সবারই চাওয়া। শিশুরা যেন পড়াশোনা করতে পারে, মাঠে খেলতে পারে, শ্রমে যুক্ত না হয়। আর দেশ অনেক জায়গায় পিছিয়ে আছে দুর্নীতির কারণে। সেখান থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। রাজধানী ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রীতিমতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত সড়কে মানুষ মারা যাচ্ছে। এখানে রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্তে আসা উচিত বলে মনে করি।
তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছে। অথচ তাদের ওপরই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। বর্তমান তরুণসমাজ নিয়ে আপনি কেমন আশাবাদী?
পারভীন হাসান: এখানে একটি ঘটনা ঘটছে। অনেক অভিভাবকই সন্তানদের দুর্নীতি করতে উৎসাহিত করছেন। পরীক্ষার প্রশ্ন জোগাড় করে দিচ্ছেন, নকল সরবরাহ করছেন। ফলে শুরুতেই নীতিনৈতিকতার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষের অধিকার বা সমাজ নিয়ে তারা আর ভাবার উৎসাহ পাচ্ছে না। আবার আমরা মিছিলগুলোতে লাঠিসোঁটা হাতে অনেক তরুণকে দেখি, অনেক শিক্ষার্থীকে দেখি। তরুণেরা যে রাজনীতিতে একেবারেই আকৃষ্ট হচ্ছে না, তা নয়। কিন্তু উদ্দেশ্যটা ভিন্ন। রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যবহার করছেন। একটা সময় মেধাবী শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে যুক্ত হতেন। এখন সেটি দেখা যায় না। কারণ, এখনকার রাজনীতিতে কোনো আদর্শ নেই, কোনো রোল মডেলও নেই, যাঁদের দেখে তরুণেরা অনুপ্রাণিত হবে। তবে তরুণেরা রাজনীতির বাইরে নানা ক্ষেত্রে ভালো করছে, দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে।
আপনাকে ধন্যবাদ
পারভীন হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ
প্রথমঅলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন