ড. আহসান এইচ মনসুর। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান। করোনার অভিঘাত কাটিয়ে যখন দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে, তখনই আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেল। এরপরই ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও ঝুঁকিতে ফেলেছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার ও জনগণের করণীয় সম্পর্কে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও রাফসান গালিব
প্রথম আলো: প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?
আহসান এইচ মনসুর: গত বছরের অক্টোবরের দিকে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গতি আসে। এর আগে কোভিডের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্যের উৎপাদন গুরুতরভাবে কমে গিয়েছিল চাহিদা না থাকায়। অনেক উদ্যোক্তা পুরোনো শিল্প ও জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছিলেন। পরে চাহিদা বাড়ায় পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। বাড়ে পরিবহন ব্যয়ও। আবার অমিক্রনের কারণে বন্দরে পণ্য খালাস ব্যাহত হয়। এসব কারণে সব আমদানি পণ্যেরই দাম বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেল, চাল, ডাল, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, গ্যাস, সার ইত্যাদি। এ ঘটনা কিন্তু ইউক্রেন সংকটের আগের। যুক্তরাষ্ট্রে ৭ শতাংশ, ইউরোপে ৬ শতাংশ এবং জাপানেও ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ঘটেছে, যা আগে কখনো হয়নি।
প্রথম আলো: চাল তো আমরা আমদানি করি না, চালের দাম কেন বাড়ল?
আহসান এইচ মনসুর: চালের চাহিদা নিজ নিজ দেশই মিটিয়ে থাকে। সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ চীন ও ভারত চাল আমদানি করে না। বাংলাদেশে চাল আমদানির ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আছে। আমি মনে করি, এর দরকার নেই। শুল্ক প্রত্যাহার করে চাল আমদানি করলে দাম অন্তত কেজিতে ১০ টাকা কমত। আমদানি বন্ধ থাকায় ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। কৃষকও লাভবান হলেন না। কেননা তাঁরা আগেই ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে লাভ হলো মজুতদারদের।
প্রথম আলো: সরকার ভোজ্যতেল, ডাল, ছোলাসহ কয়েকটি পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে। এতে দাম কমবে বলে মনে করেন?
আহসান এইচ মনসুর: আমরা কয়েক মাস আগেই বলেছিলাম শুল্ক কমানো হোক। এখন যে কমানো হলো, এর প্রভাব পড়তে রোজার মাঝামাঝি চলে যাবে। যেসব পণ্য বেশি শুল্ক দিয়ে ইতিমধ্যে বাজারে চলে এসেছে, তার দাম কমবে না। দাম বাড়ার পর সরকার সেটি ঠেকানোর জন্য শুল্ক কমাল। দরকার ছিল দাম বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া। যখন দেখা গেল ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে, তখন বোঝা উচিত ছিল এবার আশানুরূপ উৎপাদন হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সব সময়ই একটি উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সরকারও দাবি করে চালে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। অথচ বাস্তবে বাংলাদেশ চালের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ।
প্রথম আলো: কোনো কোনো গণমাধ্যমে এসেছে সরকারের ঘোষণার পর বাজারে আমদানি পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে।
আহসান এইচ মনসুর: একটা মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব তো আছেই। ব্যবসায়ীরা যখন দেখছেন দাম কমবে, তখন মজুত না করে হয়তো বেশি পণ্য বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন।
প্রথম আলো: সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।
আহসান এইচ মনসুর: ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো ২৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু পণ্যের দাম বেড়েছে জানুয়ারি থেকেই। সেই অর্থে ইউক্রেন সংকটের প্রভাব পড়েইনি এখনো। অর্থনীতি সচল হওয়ায় আমাদের আমদানি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ, রপ্তানি বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এতে ১০ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হবে, এটা পূরণ করতে হবে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে ও রিজার্ভ থেকে। জ্বালানি তেলের দাম কিছুদিন আগেও ছিল ব্যারেলপ্রতি ৬০ থেকে ৬৫ ডলার। এখন যদি ১২০ ডলার হয়, অন্যান্য পণ্যের দাম আরও বাড়বে। রাশিয়া বিশ্বের সারের চাহিদার ২০ শতাংশ রপ্তানি করে। এখন সেটি বন্ধ আছে। ফলে আমাদের আরও বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হবে।
প্রথম আলো: আপনি বলেছেন, এ মুহূর্তে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসার চিন্তা বাদ দিতে হবে।
আহসান এইচ মনসুর: আমি বাস্তববাদী হতে চাই। এ অবস্থায় রাশিয়ার সঙ্গে আমরা কোনো লেনদেন করতে পারব না। চীন ও ভারত হয়তো দ্বিপক্ষীয়ভাবে করতে পারে। আমরা পশ্চিমা বিশ্বের অবরোধ অগ্রাহ্য করে রাশিয়ার সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে পারব না।
প্রথম আলো: তাহলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কী হবে?
আহসান এইচ মনসুর: এটাও আপাতত থেমে গেল। ইতিমধ্যে রাশিয়া থেকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো: কোভিড-১৯–এ দেশের প্রান্তিক ও গরিব মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকার তাঁদের সহায়তায় কী করেছে?
আহসান এইচ মনসুর: সরকার বাজেট থেকে বেশি কিছু করেনি। এই যে বলা হয় দেড় লাখ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই ব্যাংকের টাকা। সরকার কিছু সুদের ভর্তুকি দিয়েছে। ভারত বা অন্যান্য দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রচুর সহায়তা করেছে। প্রশ্ন হলো যে টাকাটা গ্রাহকদের দেওয়া হলো, তা ফেরত আসবে কি না? সরকারের নির্দেশনা আছে, কেউ টাকা না দিতে চাইলে জোর করা যাবে না। খেলাপি করা যাবে না। তারপরও গত তিন মাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো নতুন খেলাপি ঋণ হয়েছে। আর সরকার গরিব মানুষকে যে সহায়তা দিয়েছে, তা অতি সামান্য। দুই দফায় আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছে। এ দিয়ে একটি পরিবার কত দিন চলতে পারে?
প্রথম আলো: সরকার এক কোটি পরিবারকে কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় চারটি পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপনি এ পদক্ষেপকে কীভাবে দেখছেন?
আহসান এইচ মনসুর: আমি মনে করি, এটি ভালো পদক্ষেপ। তবে উদ্দেশ্য ভালো হলেও সব সময় ভালো ফল মেলে না। এটি করা হবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা শহরে মেয়র-কাউন্সিলরের মাধ্যমে। তাঁদের তালিকা কতটা ঠিক হবে? আমরা বলেছিলাম একটা ডেটাবেইস তৈরি করা হোক; যাতে সরকারের কাছে প্রত্যেক নাগরিকের সব তথ্য থাকে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে উপকারভোগীর তালিকা তৈরি হবে। এটি চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের দিয়ে হবে না। বিবিএসের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা খরচ করে খানা জরিপ করা হয়েছিল। সেই জরিপে সবকিছু ছিল। কিন্তু সেই জরিপকে চূড়ান্ত করা হয়নি।
প্রথম আলো: ডেটাবেইস না হওয়ার কারণ কি সদিচ্ছার অভাব, না সক্ষমতার?
আহসান এইচ মনসুর: আমি বলব সরকারের নীতি পরিকল্পনা ঠিক থাকলেও বাস্তবায়নের ঘাটতি আছে। প্রধানমন্ত্রী অনেক বিষয়েই ভালো নির্দেশনা দেন। অথচ সেগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখি না। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়, মাঠপর্যায়ে তার বাস্তবায়ন দেখি না।
প্রথম আলো: অনেকের অভিযোগ, সরকার মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে ধনীদের আরও ধনী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আর গরিবেরা উন্নয়নের বাইরেই থেকে যাচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর: সবাইকে উন্নয়নপ্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে হলে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। আর সেই কর্মসংস্থান হতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক বা ফরমাল খাতে। এখন তিন হাজার লোক ভ্যানগাড়ি চালায়, সেখানে আরও এক হাজার যোগ করলে লাভ হবে না।
প্রথম আলো: করোনাকালেও আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় কর্মসংস্থান বাড়েনি। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
আহসান এইচ মনসুর: প্রবৃদ্ধির এই হিসাব তো সরকার দেয়। সরকারের সব তথ্য কি ঠিক? প্রবৃদ্ধি সব খাতেই হতে হবে। যদি আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়ে, কর্মসংস্থান না বাড়ে, তাহলে প্রবৃদ্ধি দিয়ে কী হবে?
প্রথম আলো: সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানকার ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ আছে।
আহসান এইচ মনসুর: কিন্তু বাস্তবতা তো ভিন্ন। আস্থাহীনতার কারণে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসেন না। তাঁরা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে অনুকূল পরিবেশ আছে বলে মনে করেন না। গ্রামীণফোনকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হলো। তারা আন্তর্জাতিকভাবে সালিসিতে যেতে চাইল। সরকার রাজি হলো না। তারা ৪২ শতাংশ কর দেয়। টেলিফোন খাতে কর সবচেয়ে বেশি। কোরিয়ান ইপিজেডের অবস্থা কী? ওখানে পাঁচ শ কোরিয়ান বিনিয়োগকারী চলে আসতেন, যদি ভূমির বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যেত। তাঁরা জমি কিনেছেন, কিন্তু মিউটেশন করা হয়নি।
প্রথম আলো: পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে একজন মন্ত্রী বলেছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তিন গুণ বেড়েছে। গড় আয় আর ক্রয়ক্ষমতাকে এক পাল্লায় মাপার সুযোগ কি আছে?
আহসান এইচ মনসুর: ১০ বছর আগের চেয়ে আমরা নিশ্চয়ই সবাই ভালো আছি। কিন্তু আমি তো দেখতে চাইব গত বছরের চেয়ে ভালো আছি কি না। গতকালের চেয়ে ভালো আছি কি না। বর্তমান অবস্থা থেকে সামনে যাচ্ছি, না পেছনে যাচ্ছি, সেটাই দেখার বিষয়। এখানে সরকারেরও যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি মানুষকেও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তিন গুণ বেড়েছে না বলে বলা উচিত আসুন, এই সংকটকালে আমরা একটু সাশ্রয়ী হই। আমরা বিদ্যুৎ, গ্যাসের ব্যবহার একটু কম করি। আমরা ভাত কম খাই, ভাতের বদলে আলু খাই। সবজি খাই। আমাদের গণমাধ্যমেরও সমস্যা আছে, এসব বিষয়ে নেতিবাচক খবর বেশি প্রচার করে। ভাতের বদলে আলু খেলে আমি তো সমস্যা দেখি না। সংকটের সময়টা তো পার করতে হবে, সেটা তো বেশি দিন থাকে না।
প্রথম আলো: ইউক্রেন সংকট প্রলম্বিত হলে আমরা বড় কোনো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হব কি না?
আহসান এইচ মনসুর: বড় বিপর্যয় বলতে যদি খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়া বোঝায়, আমি মনে করি সেটি হবে না। আমাদের এখন টিকে থাকার মতো সক্ষমতা আছে। আমরা হয়তো এখন যা খাই, তার চেয়ে ১০ শতাংশ কম খাব। সবাই মিলেই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। আমরা বিদ্যুৎ, গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পারি। বিদ্যুৎ কম ব্যবহার করলে জ্বালানি আমদানিও কমবে। আমরা যদি একটা পোশাক কম ব্যবহার করি, তা থেকেও দেশ উপকৃত হবে। পোশাকের রপ্তানি বাড়বে। সরকারকে সেই বার্তাটি দিতে হবে সবার কাছে। আমরা আমদানি কিছুটা হলেও কমাতে পারি।
প্রশ্ন হলো কীভাবে আমরা আর্থিক ব্যবস্থাপনাটা করব? আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। তিন গুণ আয় বাড়ছে বললে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। সবাই মিলে সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। আমি মনে করি, টাকার অবমূল্যায়ন ছাড়া আমরা আর্থিক ব্যবস্থাপনা করতে পারব না। আর সেটি করতে হবে সংকট তৈরি হওয়ার আগেই। এখনই দেখুন সরকার ঘোষিত হারে কোথাও ডলার পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বেসরকারি ব্যাংকের হারের মিল নেই। বর্তমান সংকট কাটাতে আমরা চাহিদা কিছুটা কমিয়ে ফেলতে পারি। সরকারের বাজেট কাটছাঁট করা যেতে পারে। মুদ্রানীতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। ব্যাংকের সঞ্চয় ও বিনিয়োগে সুদের হারেও সামঞ্জস্য আনতে হবে। ব্যাংকিং খাতের হাত–পা বেঁধে ফেলা হয়েছে। আমাদের ব্যয় কমাতে হবে। অন্যদিকে টাকার অবমূল্যায়ন করতে হবে। অন্যথায় রিজার্ভ কমে যাবে। সরকারের মধ্যে একধরনের নীরবতা লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু দরকার কার্যকর পদক্ষেপ। এক কোটি পরিবারকে সঠিকভাবে সহায়তা দেওয়া গেলেও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রথম আলো: কেবল ত্রাণসামগ্রী বিতরণ নয়, সবখানেই দুর্নীতি জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আহসান এইচ মনসুর: অস্বীকার করার উপায় নেই আমাদের সমাজটি এখন সর্বোচ্চ দুর্নীতিপরায়ণ। এই দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটি বেশির ভাগ হয় সরকারের আমলাদের মাধ্যমে। দেশটি এখন আমলা পরিচালিত, রাজনৈতিক নয়। বিদেশে টাকা পাচার রোধ করার উপায় হলো দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা। আগে বড় বড় দুর্নীতিবাজ পাচার করতেন। এখন সাধারণ মধ্যবিত্তরাও পাচার করছেন। তঁাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে আছেন। এখানে বাবার যে বাড়ি আছে, তিনিও বিক্রি করে বিদেশে টাকা পাঠিয়ে দেন। অনেক অভিভাবক মনে করেন, ছেলেমেয়েরা দেশে আসবে না। এখানে গভীর আস্থাহীনতা রয়েছে। বড় ব্যবসায়ীরাও মনে করেন, তাঁরা এখানে ব্যবসাটা টিকিয়ে রেখেছেন, তাঁরা জানেন কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হয়। কিন্তু উত্তর প্রজন্ম সেটি পারবে না। এর প্রতিকারে প্রয়োজন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান। এ বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা আছে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
আহসান এইচ মনসুর: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
প্রথম আলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন