|
ইকতেদার আহমেদ
|
|
জনআশা পূরণের পালা
07 November 2023, Tuesday
জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে স্বাধীনতা-পরবর্তী এক বছরের মাথায় আমাদের যে সংবিধান রচিত হয়েছে তার মূল ভিত্তি হলো জনপ্রতিনিধিত্বশীল শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী পাকিস্তানের রাষ্ট্র কাঠামোয় অনুষ্ঠিত ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনআকাক্সক্ষার প্রতিফলনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে পাকিস্তানের শাসনক্ষমতা পরিচালনার অধিকার লাভ করলেও তা থেকে বৈধ কারণ ব্যতিরেকে বঞ্চিত করার ফলে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির আবির্ভাব।
রাষ্ট্রটির জন্মের পর আওয়ামী লীগ শাসনভার গ্রহণ করলে জনগণের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা জন্ম হয় যে, নবীন রাষ্ট্রটি জনমতের প্রকৃত প্রতিফলনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা শাসিত হবে। সে আশায় প্রথম ছেদ পড়ে যখন দেখা গেল ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে তাদের বিজয় নিশ্চিত করার এক অশুভ খেলায় মত্ত হয়। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করত কিন্তু অশুভ খেলার পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে সেটি উপলব্ধি করতে হয়তো আওয়ামী লীগের একটু সময় লেগেছিল। এ নির্বাচনটিতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ কুমিল্লার দাউদকান্দি আসনে জাসদের রশিদ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে ধরাশায়ী হয়েছিলেন। কিন্তু খন্দকার মোশতাক আওয়ামী লীগের মধ্যমণি শেখ মুজিবুর রহমানের শুধু একান্ত বিশ্বস্তই নন, দলটির একজন প্রথম সারির নেতাও বটে। তাই তিনি নির্বাচনে হারলে কী করে চলে? কূটবুদ্ধিদাতারা উপায় ঠিকই বের করে দিলেন এবং নিরাপত্তার কথা বলে ব্যালট বাক্সগুলো হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে গণনা-পরবর্তী খন্দকার মোশতাককে বিজয়ী ঘোষণা করা হলো। এ অবৈধ নির্বাচন-পরবর্তী খন্দকার মোশতাক দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে মীর জাফর হিসেবে আবির্ভূত হয়ে এর মূল্য দিলেন।
বাকশাল প্রতিষ্ঠাকে গণতন্ত্র হত্যা আখ্যা দিয়ে এটিকে উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকে যৌক্তিক দেখানোর প্রয়াস নেয়া হয়। কিন্তু এটিকে যৌক্তিক বলার অবকাশ নেই।
শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও কিছু মতলববাজ বামপন্থীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মৃত্যুর ছয় মাসাধিককাল আগে নিজের দীর্ঘ দিনের লালিত গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা ও মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের এ সিদ্ধান্তটি যে ভুল ছিল তিনি তার জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেলেও তার অনুসারীরা কি তা থেকে শিক্ষা নিতে পেরেছিল? আর না পারার কারণেই দেখা গেল তাদের দ্বারা জনআশা পূরণ বারবার ব্যাহত হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ মুজিবুর রহমান পরবর্তী ১৯৭৫ সাল থেকে জিয়াউর রহমান নিহত অবধি ১৯৮১ সাল ছিল ঘাত-প্রতিঘাতপূর্ণ ও ঘটনাবহুল। শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পরবর্তী খন্দকার মোশতাককে তিন মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে অবমাননাকর ও লাঞ্ছিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়। রাজনীতির মাঠে জিয়াউর রহমানের আগমন ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত। বস্তুত ঘটনাপ্রবাহই তাকে নেতৃত্বের আসনে সমাসীন করে। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ-পরবর্তী ধীরে ধীরে রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ জিয়াউর রহমানের হাতে চলে এলেও সেনাবাহিনীর হারানো শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তাকে প্রতিনিয়তই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। সেনা কর্মকর্তা থেকে রাজনীতিক হিসেবে আবির্ভূত জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় সাফল্য বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার। জিয়াউর রহমান সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃ সূচনা করলেও বিপথগামী সেনা কর্মকর্তাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। এর এক বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে দেশ সামরিক শাসনের কবলে পতিত হলে দ্বিতীয়বারের মতো গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ছেদ পড়ে। আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা-পূর্ব গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও দ্বিতীয় দফায় দেশ সামরিক শাসনের কবলে পতিত হলে সে সামরিক শাসকের ক্ষমতা গ্রহণকে শুভ হিসেবে দেখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব বলেছিলেন-‘ও ধস হড়ঃ ঁহযধঢ়ঢ়ু’. এ সামরিক শাসক প্রায় ১০ বছরের শাসনামলে যুগান্তকারী কিছু প্রশাসনিক সংস্কার আনলেও সামগ্রিকভাবে দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে কলুষিত করে এক কলঙ্কময় ইতিহাস রচনা করেন। তার শাসনামলে এ দেশে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় নির্বাচনের কোনোটিতেই জনআকাক্সক্ষার প্রতিফলনে সরকার গঠিত হয়নি। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন প্রধান দু’টি বিরোধী দলের অন্যতম বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করার কথা না থাকলেও, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘যে দল নির্বাচনে যাবে সে দল হবে জাতীয় বেঈমান’- এমন উক্তিকে কালিমায় আবৃত করে বিএনপিকে অনেকটা বিপদে ফেলে, অকস্মাৎ দলটি নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছিল। এ নির্বাচনটিতে যদিও জনমতের প্রতিফলনে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের কথা ছিল কিন্তু কূটবুদ্ধিসম্পন্ন সামরিক শাসকের পাতানো জালে পা ফেলে আওয়ামী লীগ শোচনীয় পরাজয়ের মাধ্যমে সামরিক শাসকের দল জাতীয় পার্টির দুই-তৃতীয়াংশের অধিক আসনে জয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুতের সহযোগী হিসেবে ছিল। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নির্বাচনবিরোধী যৌথ আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করে কেন হঠাৎ আওয়ামী লীগ নির্বাচনটিতে অবতীর্ণ হয়েছিল সেটি আজও রহস্যাবৃত। বিএনপির এ নির্বাচন বর্জন তাৎক্ষণিক বিবেচনায় ক্ষতিকর ঠেকলেও পরিণামে যে তা শুভ ফলদায়ক ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির বিজয় তারই ইঙ্গিতবহ। ওই সামরিক শাসকের শাসনামলে অনুষ্ঠিত ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে দেশের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে একতরফা মাঠে পাতানো ও সাজানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাসদ গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
একজন জাতীয় নেতৃত্বের মধ্যে যে চারটি গুণাবলি যথা- সততা, একাগ্রতা, ত্যাগ ও দেশপ্রেম থাকলে তিনি জাতিকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে যেতে পারেন এসব গুণাবলি শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমান উভয়ের মধ্যে ছিল। তারা উভয়ে বেঁচে থাকলে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে খুব একটা সময় লাগত না। তাদের উভয়ের মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এ পর্যায়ের নেতা নিহত হলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের পাশাপাশি বেসামরিক তদন্ত কমিশন গঠন করে হত্যার পেছনের রহস্য উদ্ঘাটনের প্রয়াস নেয়া হয়। কোনো এক অজানা কারণে অদ্যাবধি এ দু’টি হত্যাকাণ্ড বিষয়ে বেসামরিক তদন্ত কমিশন গঠনপূর্বক প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে কাউকে সচেষ্ট হতে দেখা যায়নি এ দেশে। যদিও দাবি করা হয়, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানের হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল কিন্তু সেসব আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী কারা এবং এ দেশের কারাই বা পেছন থেকে সহযোগী ছিল- এ সত্যটি জানা গেলে এ জাতিকে হয়তো ভবিষ্যতে আর কখনো এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না।
১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী সময়কে এ দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা হিসেবে দেখা হলেও ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখার অভিপ্রায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল নিজ নিজ সুবিধাজনক স্থানে থাকাবস্থায় আন্তরিকতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অতীতের ১৯৯১ সালের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সপ্তম ও অষ্টম সংসদ নির্বাচন তুলনামূলক বিচারে এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণসহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলেও নির্বাচনগুলোতে পরাভূত দল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে- এমন স্বীকৃতি দেয়নি। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নবম যে সংসদ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে সে নির্বাচনটিতে প্রায় ৮৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি বাস্তবতার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হলেও নির্বাচনে বিজিত দল ফলাফল মেনে নেয়ায় বিজয়ী দল সংসদের নির্ধারিত মেয়াদকাল পাঁচ বছর পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছিল। এ নির্বাচনটি পরবর্তী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় সরকারের যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এর কোনোটিতেই এত অধিক হারে ভোট প্রদান এ দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেনি, যদিও সচরাচর অঞ্চলভিত্তিক প্রার্থীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগের কারণে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার অধিক হয়ে থাকে।
তত্ত্বাবধায়ক বাতিল-পরবর্তী দলীয় সরকারের অধীনে যে দশম সংসদ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে সে নির্বাচনটিকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাপকাঠিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলার অবকাশ নেই। তা ছাড়া এ নির্বাচনটিতে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত ৩০০টি আসনের অর্ধেকেরও বেশি আসনে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ নির্বাচনটি যে আদৌ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল না সে বিষয়ে কারো মধ্যে কোনো সংশয় নেই। অবশিষ্ট অর্ধেকেরও কম আসনে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে ভোটার উপস্থিতির তুলনায় যে ভোটের হার দেখানো হয়েছে তা দেশের সচেতন জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণের নির্ধারিত তারিখের পূর্ববর্তী রাতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সহায়তায় সম্পন্ন করায় যেকোনো মানদণ্ডের বিচারে এটিকে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন বলার অবকাশ নেই। বস্তুত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এমন দু’টি প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের আয়োজন করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির দাবি- দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না, এটিকে প্রতিষ্ঠিত করল।
পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ অবসানে কী পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এটি একটি মীমাংসিত বিষয়। আমাদের দেশে এটিকে মীমাংসিত করে স্থায়ী রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হলেও সেটি যেকোনো কারণেই হোক দীর্ঘকালের জন্য ফলপ্রসূ হতে পারেনি। যে আশা ও লক্ষ্য নিয়ে প্রথমত ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ এবং দ্বিতীয়ত পাকিস্তানি শাসন থেকে মুক্তিলাভ করে এ দেশে জনআশার প্রতিফলনে স্বল্প সংখ্যকবার সরকার গঠনের পর মেয়াদ পূর্ণতায় পুনঃনির্বাচনের সময় আগত হয়েছে তখনই দেখা গেছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে অশুভ উদ্যোগ। এ অশুভ উদ্যোগের কাছে জনআকাক্সক্ষা বারবার পরাভূত হয়েছে।
দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে জনআকাক্সক্ষার বিপরীতে আওয়ামী লীগের তথাকথিত বিজয় হলেও এ বিজয় যে গৌরবের নয়, তা দেশের সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে। এ নির্বাচন দু’টির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কপালে যে কলঙ্কের তিলক লেগেছে তা সহজে মুছার নয়। তাই এ বিজয় সাময়িক আত্মতৃপ্তির কারণ হলেও অচিরেই যে আত্মজ্বালা হিসেবে দেখা দেবে সেটি উপলব্ধি করতে পেরে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার মধ্যে নিহিত আছে পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার পথ। এ পথ বন্ধুর হলেও অনতিক্রম্য নয়। আর তাই যে জনআশা অঙ্কুরিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তা পূরণের পালার ক্ষেত্রে কেন আর অযথা কালক্ষেপণ?
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন