নির্লজ্জ বেহায়ার দল, আগে ২০০ টাকার শার্ট পড়তো, রিক্সায় চড়তো, মন্ত্রী হওয়ার পরে বিদেশ থেকে টেইলার আসে
01 June 2015, Monday
ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক শক্তি বল্গাহীন দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে না পারায় এবং প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় সংসদ পর্যন্ত জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতার বালাই না থাকায় সামাজিক নৈতিক অবক্ষয়ের সূচকগুলো নোংরাভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। ধর্ষণ, খুন, ডাকাতি সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বাড়ছে, কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আদমপাচারীর খপ্পরে পড়ছে। অথচ চৈতন্য ফিরে পাচ্ছেন না রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে সমাজকে সুস্থতায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব যাদের তারা।
রোববার রাতে মাই টিভির রাউন্ড টেবিল টকশোতে সিনিয়র সাংবাদিক ও দৈনিক মানবকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক পীর হাবীবুর রহমান বলেছেন, নির্লজ্জ বেহায়ার দল, আগে ২০০ টাকা দামের শার্ট পড়তো, রিক্সায় চড়তো একেক নেত্রীর অনুকম্পায় মন্ত্রী হওয়ার পরে বিদেশ থেকে তাদের জন্যে টেইলার আসে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক শক্তিগুলো ক্ষমতার জন্য লড়াই করছে।
এ লড়াই যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটা সামাজিক শৃঙ্খলার মত সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়, কিংবা ক্ষমতার বাইরে থেকেও বিরোধী দল হিসেবে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে অংশীদার হওয়া যায় এ পথ তিরোহিত হয়ে গেছে। উৎখাতের রাজনীতি ও চিরস্থায় ক্ষমতায় থাকার কৌশল অবলম্বনের যে পথ এতদিন রাজনৈতিক দলগুলো অনুসরণ ও চর্চা করে আসছে তাতে দুর্নীতিবাজরা সুযোগ নিয়েছে এবং এভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর শক্তি, প্রভাব ও আদর্শচ্যুতি ঘটেছে।
মাইটিভির ওই টকশোতে পীর হাবিব আরো বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বর যে প্রভাব থাকে, বাংলাদেশে এখন সে রাজনৈতিক নেতৃত্বর প্রভাব নাই। আগে সমাজের কিছু সিভিল সোসাইটির কিছু বিশিষ্ট নাগরিকদের কিছু প্রভাব থাকতো, সম্মান করতো সেটা এখন আর নাই। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী কে যে সম্মান দিতো এখন একজন মন্ত্রী কে ও সেই সম্মান দেয়া হয় না।
আদতেই এধরনের সামাজিক বৈশিষ্টগুলো অবক্ষয়ের নানাবিধ সূচক মাত্র। এ পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরো নোংরা হবে। পরিণতি আরো ভয়াবহ হবে জানলেও রাজনৈতিক ক্ষমতার দোসর হয়ে যারা নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখতে পুরো জাতিকে অন্ধকার গলিতে নিয়ে যাচ্ছে তারা কখনোই চান না রাজনৈতিক নেতৃত্ব সঠিক পথে ফিরে আসুক।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালাকে নিয়ে দেশটির জনগণ গর্বিত। অথচ তিনিই এ বিশ্বের দরিদ্রতম প্রধানমন্ত্রী। সম্পদ বলতে দুটি মোবাইল ফোন। দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত বাস ভবনে ওঠার আগ পর্যন্ত তিনি থাকতেন রাজধানী কাঠমান্ডুর এক প্রান্তে একটি ভাড়া বাসায়। তাও আবার নেপালি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই বাসাটি ভাড়া করা হয়েছিল।
সাদামাটা জীবন যাপনের জন্য পরিচিত নেপালের এই প্রধানমন্ত্রীর কোন ব্যক্তিগত বাড়ি-ঘর নেই, জমি নেই, নেই কোনো বিনিয়োগও। আর গাড়ি কিংবা মোটরবাইকও নেই। নেই কোন সোনা-রূপা। প্রধানমন্ত্রীত্ব তার জীবনে বদল আনতে পেরেছে সামান্যই। তারপরও সুশীল কৈরালাকে নিয়ে তার জনগণ গর্বিত।
পীর হাবিব টকশোতে তার বক্তব্যে উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, মাওলানা ভাসানির তো না হয় বাড়ি ঘর ই নাই। বঙ্গবন্ধুর এক খানা বাড়ি আছে অতি সাধারণ। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তার বাড়িতে যাও দেখো কতোটা সাধারণ জীবন যাপন তিনি করেছেন। ছয় ভাঙা বেতের মোড়া, সাধারণ আসবাবপত্র, এই একটা ফ্যান সাধারণ জিনিসের মধ্যে তিনি থেকেছেন।
সিনিয়র এই সাংবাদিক পীর হাবীব আরো বলেন, আর সেখানে এতো রক্তের বিনিময়ে একটা দেশ সেখানে রাজনীতিবিদেরা যখন বিলাসিতা করেন। যারা ঢাকা কলেজের সামনে থেকে ২০০ টাকা দামের শার্ট পড়তো, রিক্সায় চড়তো একেক নেত্রীর অনুকম্পায় মন্ত্রী হওয়ার পরে বিদেশ থেকে টেইলার এসে তাদের স্যুটের অর্ডার নিয়ে যান। আর তারা তখন এই স্যুট-টাই গরমের মধ্যে ও খুলেন না।
হয়ত এসব ভেবেই কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন.‘অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’। স্বৈরাচারকে উদ্দেশ্য করে লেখা এ কবিতা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করেছে। কিন্তু আজ জোট বাঁধতে হয়েছে সেই স্বৈরাচারের সঙ্গেই। বাড়তি উপসর্গ হিসেবে জঙ্গি তৎপরতা চোখে পড়ছে যা দেশের ভাবমূর্তিকে বিনষ্টই করছে না নিরাপত্তার জন্যে মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে। আস
পাঠক মন্তব্য
খুব মিস করি আপনার লিখা
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন