কল ছাড়লেই বের হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি। এ পানি পান না করলেও বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছে মানুষ। ফলে অসুস্থ হচ্ছেন শিশু-বয়স্করা। গত এক সপ্তাহ ধরে এমন অবস্থা রাজধানীর টিটিপাড়া ও গোপীবাগের। তবে ওয়াসার পানির বিরুদ্ধে আগে থেকেই এ অভিযোগ করে আসছেন মানিকনগর, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কুতুবখালী ও শনির আখড়া এলাকার মানুষ।
গত সোমবার সরেজমিন গোপীবাগের তমা দাদা টাওয়ারে দেখা যায়, ওয়াসার পানি ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে পানি কিনে দৈনন্দিন কাজ করছেন ভবনটির বাসিন্দারা। ভুক্তভোগীরা জানান, ওয়াসার কাছে গত এক সপ্তাহ ধরে অভিযোগ করা হচ্ছে। তারা দেখছি-দেখব করে কাল ক্ষেপণ করছে। ১১ তলার এক বাসিন্দা জানান, পানিতে নর্দমার গন্ধ। কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। ভবনে ১০ থেকে ১২ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি কেনা পানির বোতল। খাবার, গোসল, অজু সব কেনা পানিতে করছেন বলে জানান ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো কারণে ওয়াসার লাইনের সঙ্গে টিটিপাড়া খালের পানি ঢুকে পড়েছে। আগে সমস্যা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও কয়েক মাস ধরে পানির অবস্থা এতটাই খারাপ, তা যেমন পানের অযোগ্য, তেমনি রান্না বা কাপড় ধোয়ার কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
গোপীবাগের বাদল সরদার গলির এক বাড়ি মালিক আবদুল্লাহ আল হাসান বলেন, ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে পানি একদম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ওয়াসার পানিতে এত দুর্গন্ধ যে, ফুটানোর পরও তা বিন্দুমাত্র কমে না। আগে ওয়াসার লাইনের পানি ফুটিয়ে পান ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেত। কখনও কখনও ফুটানো ছাড়াও রান্নার কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন রান্নার কাজে ব্যবহার দূরে থাক, এই পানি দিয়ে গোসলও করতে পারছে না এলাকার বাসিন্দারা। কিছুদিন পরপর রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পানির পাইপ ফুটো হয়ে সেখানে স্যুয়ারেজের পানি ঢুকছে বলে ধারণা করছেন তারা।
মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবুল হাসেম বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মানিকনগর, বিশ্বরোড, যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশ এলাকায় চর্মরোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। তাদের অনেকেই পানিতে সমস্যার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে ওয়াসার মডস জোন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, মানিকনগরের তমা টাওয়ারসহ আশপাশ এলাকার পানিতে যে সমস্যা ছিল, সেটি সমাধান করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন