শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন এবার দ্বিতীয়বারের মতো শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পেয়ে তিনি যেন বেসামাল হয়ে গেছেন। একের পর এক নানারকম বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি বড়ই খেয়ে ইফতার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং জাতির কাছে এই বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনি নিজেই নিজের সুনাম খুইয়ে ছিলেন। এবার তিনি আরও এক ধাপ নিচে নামলেন।
ভিডিও ,,,,click here
তিনি এবার মন্তব্য করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। যারা এবার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে, তাদেরকে ফকিন্নির ছেলে, মাদারচোদ, চুদির পুত, রাস্তাঘাটে যেখানে পাবে লাথি দিয়ে বের করে দিতে হবে এমন মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন। তিনি এই সমস্ত অশ্লীল কথাবার্তা বলছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে উৎসাহিত করছেন। যখন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কে আশীর্বাদ হিসেবে মনে করছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে নিশ্চিত ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, ঠিক সেই সময় শিল্প মন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের সরাসরি বিপক্ষে। তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করলেন? যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তারা সকলেই প্রধানমন্ত্রী আশীর্বাদ পুষ্ট।
এবার বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি এবং বিএনপির এই অনুপস্থিতির কারণে নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছিল। এরকম একটি পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী তার বিচক্ষণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগের যারা স্বতন্ত্র হতে ইচ্ছুক তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।
এদের কারণেই এই নির্বাচন এবার হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং আকর্ষণীয়। আর এরকম একটি নির্বাচনে ৫৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। যেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনন্য রেকর্ড। এরপর প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদেরকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্বতন্ত্রদেরকে গণভবনে ডেকেছেন এবং তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছেন। নৈশভোজেও তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন, যারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে তারা দলের জন্য উপকার করেছে৷ কারণ এই স্বতন্ত্র নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যখন স্বতন্ত্রদের আলাদা মর্যাদা দিচ্ছেন, তাদেরকে বিশেষভাবে সম্মান দিচ্ছেন, তখন শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য নতুন করে ভাবনা সৃষ্টি করেছে। তাহলে শিল্পমন্ত্রী কার প্রতিনিধিত্ব করেন?
প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না করেছেন। স্বতন্ত্রদের সাথে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার জন্য বলেছেন। আর অন্যদিকে, শিল্পমন্ত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং স্বতন্ত্রদের প্রতি অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। তাহলে, শিল্পমন্ত্রী কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে?
এর আগে বড়ই তত্ত্ব দিয়ে তিনি সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছিলেন। এখন তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সম্বন্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য বলে আরেকটি বিতর্কের জন্ম দিলেন। তাহলে তিনি কি শেখ হাসিনার প্রতি অনুগত? নাকি কোন অন্য এজেন্ডা রয়েছে এই প্রশ্নটি এখন উঠেছে। তার বক্তব্য সংক্রান্ত ভিডিওটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন