পড়ালেখায় নবম শ্রেণি পাস। পেশায় ‘ছেঁড়া বস্তা’ ব্যবসায়ী। এলাকাবাসীর আস্থাভাজন জনপ্রতিনিধি হয়ে জাতীয় সংসদে যাবেন—এমনটাই আশা ছিল মোফাজ্জল হোসেনের। মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে জরুরি কাগজপত্র সংগ্রহ করতে জেলা শহরে গিয়েছিলেন। ফিরতে দেরি হয়ে যায়। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষে ঢুকতেই বিকেল চারটা পার হয়ে যায়। পরে জানতে পারলেন, সময় শেষ, মনোনয়নপত্র আর জমা দিতে পারবেন না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১ মিনিটে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়ের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর-নবাবগঞ্জ-ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর) তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন। দেরিতে পৌঁছানোয় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর মনোনয়নপত্র জমা নেননি।
মোফাজ্জল হোসেন হাকিমপুর পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাসুদেবপুর মহল্লার বাসিন্দা। এক মাস আগে তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন। তৃণমূল বিএনপি জেলা কমিটির সদস্য তিনি। পেশায় পৌর শহরের চুড়িপট্টি এলাকায় ছেঁড়া বস্তার ব্যবসায়ী। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর তিনি ফরম এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
মোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার দুপুরে হাকিমপুর থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মনোনয়নপত্রের শর্তানুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঙ্গে আয়কর জমার কাগজও দরকার ছিল। সেই কাগজ সংগ্রহ করতে সকাল থেকে ফুলবাড়ী ও দিনাজপুর শহরে ব্যস্ত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই ফরম জমা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাস্তায় যানজটের কারণে ইউএনও কার্যালয়ে অফিসে তাঁর ১ মিনিট দেরি হয়। পরে ফরম জমা দিতে চাইলে ইউএনও ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সময় শেষ হয়ে গেছে তাঁর ফরম জমা নেননি বলে জানান।
মোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, ‘মাত্র এক মিনিটের জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিতে না পারায় অনেক খারাপ লাগছে। বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও অমিত রায় প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। মোফাজ্জল হোসেন বিকেল ৪টার পরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলেন। নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় তাঁর ফরম জমা নেওয়া হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন