ম্যাচশেষে হয়ে গেছে তখন মিনিট বিশেক হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাসে একটুও ভাটা পড়েনি তখনও।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে তারা মেতেছিলেন খুঁনসুঁটিতে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এসে শান্ত হতে বললেন সবাইকে, বার্তা দিলেন খুব বেশি কথা না বলার।
তাতে তেমন কাজ হলো বলেও মনে হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। ভারতের বিপক্ষে ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নেমে বাংলাদেশের এটি প্রথম জয়, সেটিও এসেছে মিরপুরের মাঠে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপে সপ্তম ম্যাচে এসে এই প্রথম হারলো ভারত। এশিয়া কাপ বা কোনো টুর্নামেন্টের বাইরে, মেয়েদের ক্রিকেটে এটা কি সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের?
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ভারতকে হারিয়ে আসা অধিনায়ক জ্যোতি বলেন, ‘আমরা যখনই যা করছি, সব ইতিহাসের অংশ হয়ে যাচ্ছে (হাসি)...এটাও বলবো। লম্বা সময় পরে ভারতের বিপক্ষে জেতা। বলবো যে অনেক লম্বা সময় এর সঙ্গে হচ্ছে মিরপুরের মাঠে জয়। আমি বলবো অবশ্যই ইতিহাসের অংশ। ইতিহাসের লেখাগুলো যেন আরেকটু বাড়াতে পারি সেটা আমাদের চেষ্টা থাকবে। ’
ভারতের বিপক্ষে এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে জয় পায় টাইগ্রেসরা, যদিও হারতে হয় সিরিজ। ভারতের বিপক্ষে সেটি ছিল এই ফরম্যাটে তৃতীয় জয়। আগের দুটিই এসেছিল ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে। শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয়ের পর একদমই উদযাপন করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশকে। অধিনায়ক পরে সংবাদ সম্মেলনেও বলেছিলেন, কাজ এখনও অনেক বাকি। প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর উদযাপন করলেও জ্যোতি বলছেন, শেষ হয়নি এখনও।
তিনি বলেন, ‘মেয়েরা অনেক বেশি রোমাঞ্চিত ছিল কিন্তু আমি বলেছি যে না আসলে শেষ হয়নি এখনও। কারণ যখন আপনি ভালো করবেন আপনার প্রতি দায়িত্বটা আরও বেশি থাকবে। যেমন আপনাদেরও একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে যেন আমরা সিরিজ নিই, আমাদেরও একই। ’
‘কারণ আমরা জানি আমরা ভালো ক্রিকেট খেললে একটা ধাপ এগিয়ে যাবো যা আমাদের ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় অর্জন হবে। ওদের থামিয়ে রেখেছি যে উল্লাসের এখনও অনেক কিছু বাকি আছে। হয়তো সিরিজ নিতে পারলে দেখা যাচ্ছে ওভাবে আমরা সেলিব্রেট করবো। ’
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে কাছে গিয়েও পারেনি জিততে। ৯৭ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ হারে ৮ রানে। ওই ম্যাচের পর অধিনায়ক জ্যোতি বলেছিলেন দ্রুত ‘মুভ-অন’ করতে চান তারা। দলের প্রতি ম্যাচ হেরে কী বার্তা দিয়েছিলেন অধিনায়ক? সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন সেটি।
জ্যোতি বলেন, ‘আমি সবসময় চেষ্টা করি দলের ভেতর ইতিবাচক ভাইব তৈরি করতে। নির্দিষ্ট দিনে একজন ক্রিকেটারের বাজে সময় যেতে পারে তার মানে এই না যে তার সামর্থ্য নেই। আমি চেষ্টা করি সবসময় সবাইকে ব্যাক করার জন্য। আমি ড্রেসিংরুমে একটা কথাই বলেছি যে আমরা আমাদের গর্ব ও সম্মানের জন্য ক্রিকেট খেলবো। ’
‘সবাইকে এটাই মনে করিয়ে দিয়েছি আমরা কতটুকু পারি। যা করতে পারি সেটা যদি করে দেখাতে পারি ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। সিরিজ হারার পর আমার একটা কথাই ছিল ওয়ানডেতে ভালো ক্রিকেট খেলতে হলে আগামী ম্যাচে জয় দরকার। মেয়েরা অনেক ইতিবাচক ছিল, কোচিং স্টাফ থেকেও ইতিবাচকভাবে চিয়ার আপ করেছে। সবার ভেতর বিশ্বাস ছিল। ’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন