ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করার অভিযোগে ১৯টি ভারতীয় সংস্থা ও দেশটির দুই নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাৎক্ষিণভাবে ওই দুই ব্যক্তির নাম জানা যায়নি।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা দিয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করার অভিযোগে বিভিন্ন দেশের ৩৯৮ সংস্থা ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে ১৯টি ভারতীয় সংস্থা ও দেশটির দুই নাগরিক।
রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, হংকং, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ডের মতো ভারতীয় সংস্থাগুলোও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে। অভিযোগ, এসব সংস্থা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ১২০ ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ট্রেজারি বিভাগ চিহ্নিত করেছে ২৭০ ব্যক্তি ও সংস্থাকে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ৪০টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ভারতের বেসরকারি ১৯টি সংস্থার মধ্যে একটি হলো ‘অ্যাসেন্ট অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’। অভিযোগ, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ মার্চ পর্যন্ত তারা রাশিয়াভিত্তিক সংস্থাকে সাত শতাধিকবার সামরিক যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করেছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই লাখ ডলারের বেশি কমন হাইপ্রায়োরিটি তালিকাভুক্ত (সিএইচপিএল) পণ্য। এসব পণ্য যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে জরুরি।
এই একই পণ্য সরবরাহ করেছে আরেকটি ভারতীয় সংস্থা। নাম মাস্ক ট্রান্স। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার সংস্থাকে তারা তিন লাখ ডলার মূল্যের সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। অন্য দুটি সংস্থা হলো ফিউট্রেভো এবং শ্রেয়া লাইফ সায়েন্সেস প্রাইভেট লিমিটেড।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, সব মিলিয়ে ১৯টি সংস্থাই বিভিন্নভাবে রাশিয়ার সামরিক কাজে সহায়তা করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ায় ওই সব সংস্থার প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের রপ্তানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। ফিউট্রেভো সরবরাহ করেছে ১৪ লাখের বেশি ডলারের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। প্রত্যেকের লেনদেনই হয়েছে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে রাশিয়া ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকেও তারা লাভ করে চলেছে। যেভাবে তারা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও যন্ত্রাংশ আমদানি করছে, তা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সচেষ্ট।
এমন সময় এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসল যখন ভারত ও চীন লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) স্থিতাবস্থা রক্ষা ও উত্তেজনা কমাতে মুখোমুখি সেনা অবস্থান সরিয়ে নেওয়ার কথা জানায়। সূত্র: ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন