গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার ওপর জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৭ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকুক।
ব্রিফিংয়ে বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নোত্তরের একপর্যায়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, সম্প্রতি জনগণের সহিংস আচরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ইস্যু নিয়ে ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করা হয়।
প্রথম প্রশ্ন করা হয়, দুর্গাপূজাকে ঘিরে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিয়ে। সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনায় নানা উদ্বেগের মধ্যেও বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই উৎসবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিবেশী ভারতের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশ সরকারের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন যোগাযোগ করেছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়।
উত্তরে মিলার বলেন, তারা অবশ্যই চান বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক। তাদের এই অঙ্গীকার বিশ্বের সব দেশের জন্যই সত্য বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এরপর প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশে চলমান ‘দলগত সহিংসতা’ (মব ভায়োলেন্স) ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড (লিঞ্চিং) নিয়ে। ফ্রান্স ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা জেএমবিএফ বাংলাদেশে বেড়ে চলা দলগত সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জরুরি ভিত্তিতে তা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ রয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ‘নিরপরাধ ব্যক্তিদের’ বিরুদ্ধে মামলা করার হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিক।
জবাবে মিলার বলেন, প্রশ্নকারীর উল্লেখ করা নির্দিষ্ট ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রীর’ সঙ্গে মাত্র দুসপ্তাহ আগে জাতিসংঘে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই সময় প্রশ্নকারী সাংবাদিক তাকে শুধরে দিয়ে বলেন, ড. ইউনূস বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে এখন কোনও প্রধানমন্ত্রী নেই।
তার কথায় সম্মতি জানিয়ে মিলার বলেন, ড. ইউনূস এখন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্নোত্তরের শেষে তিনি বলেন, দেশটিতে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে সেখানে সম্প্রতি ঘটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন মিলার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন