বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আরও কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে একটি সরকারি ব্যাংক ও বাকিগুলো বেসরকারি খাতের ব্যাংক। এসব ব্যাংকের কাছে অচিরেই ব্যাখ্যা তলব করা হবে। আরও কিছু ব্যাংককে সতর্ক করা হবে।
আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দাম নিচ্ছে কিছু ব্যাংক-এমন অভিযোগ পেয়ে গত মাসে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে ১৩টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওইসব ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। ব্যাংকগুলো যে জবাব দিয়েছে এর মধ্যে ১০টি ব্যাংকের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্তুষ্ট হতে পারেনি। পরে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাব আগামী সপ্তাহের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর সেগুলো পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া তিনটি ব্যাংককে সতর্ক করে দিয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে বেশি দামে ডলার বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি সরকারি ও বাকিগুলো বেসরকারি খাতের ব্যাংক। এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা তদন্ত করে। এতে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। এর জবাব সন্তোষজনক না হলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া মানেই হচ্ছে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কিছু না কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আওতায় জরিমানাসহ চাকরিচ্যুতির ঘটনাও ঘটতে পারে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলো ডলার বেচনাকেনা করে ডিলিং রুম থেকে। ডিলিং রুমের প্রধান হচ্ছে ট্রেজারি কর্মকার্তা। তবে তিনি ব্যাংকের এমডির নির্দেশেই ডলারের দর নির্ধারণ করে থাকেন। এ কারণে গত বছরে ট্রেজারি প্রধানদের পাশাপাশি কয়েকটি ব্যাংকের এমডির কাছেও ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বুধবার ব্যাংকের পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর সঙ্গে বৈঠকেও এ বিষয়টি উঠে আসে। এতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি করার বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। বিএবির পক্ষ থেকে ডলার সংকটের মধ্যে বিষয়টি নমনীয়ভাবে দেখার সুপারিশ করা হয়। বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) গত আগস্টের শুরুতে আমদানিতে ডলারের দর সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা বেঁধে দিয়েছিল। ওই সময়ে কোনো কোনো ব্যাংক আমদানিতে ১১৩ থেকে ১২০ টাকা করে ডলার বিক্রি করেছে। তারা বেশি দামে ডলার কিনেছেন বলে বাড়তি দামে বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের এ যুক্তি মানতে নারাজ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন