বিশ্বের ‘সবচেয়ে প্রাচীনতম’ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রেই এবার নির্বাচনের আগে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে গণতন্ত্র নিয়ে। দেশটির ভোটারদের প্রায় অর্ধেকই এ নিয়ে আছেন শঙ্কায়। কিন্তু হঠাৎ তাদের এমন উদ্বেগের কারণ কী?
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, মার্কিন ভোটাররা রাজনৈতিক সহিংসতা, নির্বাচনের ফলাফল উল্টে ফেলার চেষ্টা এবং গণতন্ত্রের জন্য বৃহত্তর প্রভাব সম্পর্কে শঙ্কায় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন।
দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চ পরিচালিত এক জরিপের ফলাফল অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ভোটারদের ৪০ শতাংশই বলেছেন যে তারা নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়ার সহিংস প্রচেষ্টার বিষয়ে ‘অত্যন্ত’ বা ‘খুব’ উদ্বিগ্ন।
এই উদ্বেগের পেছনে রয়েছে নির্বাচনী জালিয়াতি নিয়ে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত দাবি এবং তার ভবিষ্যদ্বাণী যে, তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপি হলেই কেবল তিনি পরাজিত হবেন।
নিবন্ধিত ভোটারদের প্রায় ৯০ শতাংশ বিশ্বাস করেন, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শেষ হয়ে গেলে এবং আইনি চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান হয়ে গেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত ব্যক্তিকে তা স্বীকার করা উচিত।
তবে ভোটারদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মনে করছেন, ট্রাম্প ফলাফল মেনে নেবেন (হেরে গেলে) এবং পরাজয় স্বীকার করবেন। এ ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মতামত আবার আলাদা।
রিপাবলিকান ভোটারদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন, ট্রাম্প স্বীকার (পরাজয়) করবেন; যেখানে এ বিষয়ে একমত প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন ডেমোক্র্যাট।
বিপরীতভাবে, ১০ জনের মধ্যে প্রায় 8 জন ভোটার (যার মধ্যে রিপাবলিকানও রয়েছে) বিশ্বাস করেন যে কমলা হ্যারিস ফলাফল মেনে নেবেন এবং হারলে তা স্বীকার করবেন।
গণতন্ত্রের বিষয়ে, ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানরা তাদের মতামত নিয়ে বিভক্ত। প্রায় অর্ধেক ভোটার বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রকে ‘অনেক’ বা ‘কিছুটা’ দুর্বল করে দেবেন। যেখানে ৪০ শতাংশ ভোটার হ্যারিসকে নিয়ে একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, গভীর মতাদর্শগত ব্যবধানই আমেরিকানদের বিভক্ত করে। এই পার্থক্যের একটি বড় কারণ হলো মার্কিন ক্যাপিটলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির হামলা, যার জন্য ডেমোক্র্যাট এবং স্বতন্ত্ররা ‘পুরোপুরি’ বা ‘বেশ কিছুটা’ দায়ী করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
ক্যাপিটলে হামলা ছাড়াও আরও অনেক প্যারামিটার রয়েছে, যেখানে মতাদর্শগত পার্থক্য দেখা দেয় মার্কিনিদের মধ্যে। এর মধ্যে অন্যতম হলো পপুলার ভোটের বদলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার জন্য ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবহার।
সূত্র: এনডিটিভি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন