ভারতে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বাতাস ঘুরছে
18 March 2018, Sunday
গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের গোরখপুর ও ফুলপুর এবং বিহারের আরারিয়া লোকসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর বিজেপির ত্রিপুরা এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য একাধিক রাজ্যে নির্বাচন জয়ের উল্লাস এখন তাদের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার করেছে।
২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের রাজ্য নির্বাচনে বিজেপির বিপুল বিজয় এবং সরকার গঠনের পর সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও তার ডেপুটি কেশব প্রসাদ মৌর্য তাদের লোকসভা সদস্যপদ ত্যাগ করার পর গোরখপুর ও ফুলপুরে এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আদিত্যনাথ পরপর পাঁচবার গোরখপুর থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং গত নির্বাচনে তিনি জিতেছিলেন তিন লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে। এদিক দিয়ে গোরখপুর ছিল আদিত্যনাথের একটি দুর্গের মতো।
সেই দুর্গের এখন পতন হয়েছে শোচনীয়ভাবে। লক্ষ করার বিষয়, বিজেপির এই পরাজয় ঘটল গত বছর উত্তর প্রদেশে তাদের বিপুল বিজয়ের পর! এর থেকেই বোঝা যায় কিভাবে ভারতের রাজনীতিতে এখন দ্রুত পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। উত্তর প্রদেশ ও বিহার ভারতের দুটি বড় রাজ্য এবং এ দুই রাজ্যে লোকসভার সদস্য সংখ্যা হল ৫৪৩-এর মধ্যে ১২০। এদিক দিয়ে লোকসভা নির্বাচনে এ দুই রাজ্যের থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আর নেই। অন্যদিকে ত্রিপুরা, সিকিমসহ উত্তর ভারতের ৮টি রাজ্যে লোকসভার সদস্য সংখ্যা হল ২৫। কাজেই যদি বিজেপি এই ৮টি রাজ্যে ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে, যার সম্ভাবনা কম, তাহলেও কেন্দ্রে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তার গুরুত্ব সামান্য।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে পর্যন্ত উত্তর প্রদেশের রাজনীতি ও নির্বাচনে দীর্ঘদিন ধরে বর্ণ পার্থক্য খুব নির্ধারক ভূমিকা পালন করে আসছিল। এর ফলে মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন ‘বহুজন সমাজ পার্টি’ (বিএসপি) এবং মুলায়েম সিং যাদবের নেতৃত্বাধীন ‘সমাজবাদী পার্টি’ (এসপি) পালাক্রমে উত্তর প্রদেশে রাজ্য সরকার গঠন করে এসেছে।
কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি ভারতজুড়ে হিন্দুত্বের নামে যে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিলেন, তার প্রভাবে উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বর্ণ পার্থক্য সাম্প্রদায়িক পার্থক্যে রূপান্তরিত হয়েছিল। এ কারণে উত্তর প্রদেশে মুসলমানদের সংখ্যা ২০ শতাংশ হলেও একজন মুসলমানও লোকসভায় নির্বাচিত হননি।
দলিতসহ ৮০ শতাংশ হিন্দু ভোটার মুসলমানদের শত্রু জ্ঞান করে তাদের কোনো ভোট দেয়নি। শুধু সাধারণ নির্বাচনেই নয়, গত বছর রাজ্য নির্বাচনেও এটা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু উত্তর প্রদেশ ও বিহারে এখন উল্টো রাজনৈতিক বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলেই দুটি রাজ্য উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন।
ভারতের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এর জন্য শুধু বিএসপি ও এসপির ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতাকেই সব থেকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এটা ঠিক যে, এই ঐক্যের কারণেই বিজেপির পরাজয় বড় আকারে হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, ভোটাররা যদি বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত না হতেন তাহলে এই পরাজয় বিজেপির ভাগ্যে জুটত না। এ দুই দল ঐক্যবদ্ধ না হলেও ভোটাররা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিতেন। তার ফলে ঐক্য ছাড়াও বিজেপির পরাজয়ের যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। পরিস্থিতির এই দিকটি উড়িয়ে দেয়ার নয়।
বিজেপির বিরুদ্ধে দলিতদের পরিবর্তিত অবস্থান এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। শুধু সাম্প্রদায়িক প্রচারণাই নয়, নির্বাচনের সময় বিজেপি দলিতদের নানা ধরনের সুবিধা দেয়ার কথা বলে প্রতিশ্র“তির বান ভাসিয়েছিল। সেসব প্রতিশ্র“তি পালন করা তো দূরের কথা, ভারতের বড় পুঁজির স্বার্থে, আম্বানী, টাটা ইত্যাদির স্বার্থে তারা ভারতের অর্থনীতিতে যে কীর্তিকলাপ গত চার বছরে ঘটিয়েছে তার ফলে দলিতদের ওপর বিজেপির শোষণ-নির্যাতন আগের যে কোনো সময়ের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তারা এই শোষণ-নির্যাতনের মুখে বিজেপির থেকে এখন নিজেদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী এক বছরে, ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপির ওপর তাদের যেটুকু আস্থা এখনও আছে, তা নিঃশেষিত হবে।
দলিতদের ওপর নির্যাতনের একটা বড় দিক হল- ‘গো রক্ষার’ নামে দলিতদের খাদ্য অধিকারের ওপর আক্রমণ। আসলে দলিতরা হিন্দু নয়। জোর করে ও নানা কৌশলে তাদেরকে হিন্দু তালিকাভুক্ত করা হলেও তারা খাদ্যাভ্যাস থেকে নিয়ে দেবদেবীর পূজা অর্চনা এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়ে বর্ণ হিন্দুদের থেকে অনেক পৃথক।
২০১৪ সালে নির্বাচনের পর বিজেপি এই পার্থক্যের প্রতি নজর দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। উপরন্তু ক্ষমতামদমত্ত অবস্থায় তারা এসবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দলিতদের ওপর তাদের শোষণ-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। এ কারণে তারা যে অন্য জায়গা বাদ দিয়ে খোদ নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটেও বিজেপির অবস্থা সঙ্গিন করেছে, এটা অল্পদিন আগে অনুষ্ঠিত গুজরাট রাজ্য নির্বাচনে দেখা গেছে। এ কারণেই সম্প্রতি রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের রাজ্য উপনির্বাচনেও বিজেপির প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এখন উত্তর প্রদেশ ও বিহারে তারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে আরও বড় আকারে।
ভারতে ইতিহাস বিকৃতি এবং ইতিহাস চর্চা কলুষিত করার জন্য নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি ব্যাপক এক কর্মসূচি কার্যকর করছে। এজন্য পাঠ্যপুস্তক নতুনভাবে তৈরি করে তারা ভারতের ইতিহাস বিষয়ে ছাত্রদের জন্য মিথ্যা ইতিহাস পর্বের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু নির্বাচনে তাদের পরাজয় ও তাদের বিরুদ্ধে জনমত ঘুরতে থাকার ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব নেই।
প্রভাব আছে তারা তাদের উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচার ও কার্যকর করতে নিযুক্ত হয়ে জনগণের ওপর যে নির্যাতন করছে সেসবের। এর মধ্যে ‘গো রক্ষার’ নামে তাদের কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য। গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করে তারা মুসলমান, খ্রিস্টান ইত্যাদি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ও দলিতদের খাদ্য অধিকারের ওপর যে আক্রমণ করছে তার ভূমিকা এক্ষেত্রে অনেক বেশি।
বিজেপি ও তাদের ঘরানার সঙ্ঘ পরিবারভুক্ত দলগুলোর লোকরা তাদের তথাকথিত গো রক্ষা নীতি কার্যকর করতে দাঁড়িয়ে গরু খাওয়া, এমনকি গরু খাওয়ার ও গরুর মাংস ঘরে রাখার মিথ্যা অভিযোগে মুসলমানরা, খ্রিস্টান ও দলিতদের হত্যা পর্যন্ত করছে।
এভাবে তাদের ভণ্ডামিপূর্ণ গো রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা ভারতের অর্থনীতি ও কৃষকদের জীবনে কী বিপর্যয় সৃষ্টি ইতিমধ্যে করেছে তার কোনো হিসাব বা ধারণা তাদের ছিল না। কিন্তু এভাবে গো রক্ষা নীতি কার্যকর এবং গরু জবাই বন্ধ করা এখন নির্বাচনের সময় বুমেরাং হয়ে তাদের সর্বনাশ ডেকে আনছে। গো রক্ষা নীতির কারণে কৃষকরা অকেজো গরু বিক্রি করে যে টাকা পেতেন সেটা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ গরু বিক্রি নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে অকেজো গরুকে বসিয়ে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য কৃষকদের না থাকায় তারা গরু ছেড়ে দিচ্ছেন। বাড়ি থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন এবং তারা নিজেদের জীবন রক্ষার জন্য কৃষকদের ফসলের ক্ষেতে ও চারণভূমিতে নামছে। এর ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিজেপির বিরুদ্ধে কৃষকদের মনোভাব পরিবর্তনের এটাই হল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এজন্যই গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, বিহার ইত্যাদি রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে কৃষকদের মনোভাব এখন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। উপরোক্ত কয়েকটি নির্বাচনে এই পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটলেও এর আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত হল, কয়েকদিন আগে ১৮০ কিলোমিটার পথ মিছিল করে এসে ৩০ হাজার কৃষক কর্তৃক মুম্বাই এসে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ঘেরাও এবং নিজেদের কতকগুলো দাবি-দাওয়া আদায়!
‘গো রক্ষার’ রাজনীতি যে বিজেপির জন্য কত বড় এক ধান্ধাবাজির ব্যাপার এটা পুরোপুরি উন্মোচিত হয়েছে ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্ব ভারতে সাম্প্রতিক নির্বাচনের সময়। এই সমগ্র অঞ্চলের বিপুল অধিকাংশ ভোটার আদিবাসী ও খ্রিস্টান এবং তারা গো মাংস খেয়ে থাকেন। এ কারণে নির্বাচনের সময় বিজেপি তাদের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বলেছিল, এসব অঞ্চলে তারা গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করবে না। কাজেই বিজেপি জয়লাভ করলে তারা গরু খেতে পারবে! ‘গো রক্ষার’ ব্যাপারে বিজেপি এভাবে যে ভণ্ডামির নিদর্শন স্থাপন করেছে এটা শুধু গো রক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, বিজেপি শাসনকালে ভারতের সর্বত্রই নানাভাবে দেখা গেছে। এখন তাদের এই ভণ্ডামি, ধাপ্পাবাজি ও জনস্বার্থ বিরোধিতা বেশ পরিষ্কারভাবে মানুষের কাছে ধরা পড়ায় আগামী নির্বাচনে তাদের ধরাশায়ী হওয়ার শর্ত দ্রুত পরিপক্ব হচ্ছে। এ পরিস্থিতির দিকে তাকিয়েই উত্তর প্রদেশে ‘বহুজন সমাজ পার্টির’ নেত্রী মায়াবতী ১৬ তারিখে হরিয়ানায় এক জনসভায় বলেছেন, বিজেপি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনতে পারে। কারণ নির্বাচন যত দেরিতে হবে, বিজেপির অবস্থা তত বেশি খারাপ হবে এবং তাদের জন্য আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য বিপর্যয়ের শর্ত তৈরি হতে থাকার সময় অনেক ধরনের সংকট তাকে ঘেরাও করতে থাকে। বিজেপির ক্ষেত্রেও এটা ঘটছে। অন্ধ্রপ্রদেশে তাদের জোটভুক্ত মিত্র ক্ষমতাসীন তেলেগু দেশম পার্টি এবং ণঝজ কংগ্রেস নামে কংগ্রেস থেকে বের হয়ে আসা একটি গ্রুপ এখন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কছেদ করে পার্লামেন্টে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে।
এটা বিজেপির জন্য একটা বড় সংকট তৈরি করবে। কারণ অন্ধ্রপ্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টি বিজেপি জোটের একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ শরিক। কাজেই জোটের এই ভাঙন যে শুধু অন্ধ্রপ্রদেশেই সীমাবদ্ধ থাকবে তাই নয়, তাদের আরও জোটভুক্ত মিত্র বিজেপিকে পরিত্যাগ করে তাদেরকে সংকটজনকভাবে একঘরে করবে এবং তার প্রভাব যে নির্বাচনে বড় আকারে পড়বে এতে সন্দেহ নেই।
এই ঘুরতে থাকা পরিস্থিতিতে ভারতের কমিউনিস্টদের মধ্যে, বিশেষত সংসদীয় দল সিপিএম, সিপিআই ইত্যাদির মধ্যে নির্বাচনী জোট গঠনের তাগিদ জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে কংগ্রেস বা অন্য কোনো দক্ষিণপন্থী দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট বেঁধে তারা ক্ষমতার স্বাদ আবার কিছুটা হয়তো ফিরে পেতে পারেন, কিন্তু তার দ্বারা কমিউনিস্ট আন্দোলন আরও দুর্বল হওয়া ছাড়া কিছু হবে না। যেভাবে তারা সংসদীয় রাজনীতির মধ্যে নিমজ্জিত আছেন তাতে রাতারাতি সংসদীয় নির্বাচন বর্জন করার চিন্তা বা প্রস্তাব হল অবাস্তব। কিন্তু দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে কোনো জোট না বাধার চিন্তা ও প্রস্তাব বাস্তব।
তারা নির্বাচনে নেমে বিজেপির হাজারও প্রতিক্রিয়াশীল অপকীর্তির স্বরূপ উন্মোচনের কাজে নিযুক্ত হলে এ ধরনের জোট না বেঁধে, জোটের চিন্তা বামপন্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে নির্বাচনে অনেক জায়গাতেই সাফল্য পেতে পারেন। তারা জয়লাভ করতে পারেন। এ পর্যায়ে এই জোটসামর্থ্য তাদের পক্ষে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনার পরিবর্তে নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখা এবং ভারতের রাজনীতিতে কিছুটা গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু ক্ষমতার লোভ বড় সাংঘাতিক জিনিস। এ অবস্থায় তারা আগামী নির্বাচনে কী কৌশল অবলম্বন করবেন সেটা অদূর ভবিষ্যতেই দেখা যাবে।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
উৎসঃ যুগান্তর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন