|
ইকতেদার আহমেদ
|
|
পাকিস্তানের মিডিয়া পরিদর্শনে
02 July 2024, Tuesday
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
৬ মে ২০২৪ সকাল ১০টায় প্রতিনিধিদল লাহোরের পিটিভি (পাকিস্তান টেলিভিশন) পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদলকে পিটিভির সম্প্রচারবিষয়ক সামগ্রিক কার্যাবলি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। প্রতিনিধিদলের সাথে পিটিভির কর্মকর্তাদের আলাপকালীন পিটিভি ও বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কিভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন ও দৃঢ়করণে ভূমিকা রাখতে পারে তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পিটিভি লাহোরে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো উর্দু এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের আঞ্চলিক ভাষাসহ ইংরেজিতে প্রচারিত হয়। লাহোরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে বিধায় প্রতিনিধিদলের পক্ষ হতে লাহোর পিটিভির কর্মকর্তাদের বাংলায় অনুষ্ঠান সম্প্রচারের বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা নিতে অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়ে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
প্রতিনিধিদল দুপুরে পাকিস্তান ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস পরিদর্শন করে। এটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এর আগের নামের পরিবর্তন করা হয়নি। ন্যাশনাল কলেজ অব ফাইন আর্টস ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৭৫ সালে মায়ো স্কুল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে কলেজটির নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস (এনসিএ) রাখা হয়।
প্রতিনিধিদলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুর্তোজা জাফরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম বিষয়ে অবহিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষাকার্যক্রম প্রত্যক্ষ করার ব্যবস্থা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বর্তমানে ১১টি বিষয় যথা- আর্কিটেকচার, ফাইন আর্টস, কমিউনিকেশন ডিজাইন, সিরামিক ডিজাইন, প্রোডাক্ট ডিজাইন, টেক্সটাইল ডিজাইন, সঙ্গীত, ফিল্ম ও টেলিভিশন, মাল্টিমিডিয়া আর্টস, ওয়াইকেআই এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ থেকে কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী হলে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা যে পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়ন করতে পারেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যও সমপরিমাণ অর্থ ব্যয়ে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়ার আশ্বাস দেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে পাকিস্তান ছাড়াও আফগানিস্তান, ইরান ও আজারবাইজানের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করেন।
পড়ন্ত বিকেলে প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক জনক গাজী আল্লামা মুহম্মদ ইকবালের সমাধি জিয়ারত করে। সমাধিস্থলটি বাদশাহি মসজিদের ফটক এবং লাহোর ফোর্টের মাঝামাঝি হুজুরিবাগের বাগানে অবস্থিত। পাকিস্তান সরকার সমাধিস্থলের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। আল্লামা ইকবাল অবিভক্ত ভারতের একজন মুসলিম কবি, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং ব্যারিস্টার ছিলেন। তার ফারসি ও উর্দু কবিতা আধুনিক যুগের ফারসি এবং উর্দু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার অন্যতম চিন্তাদর্শন ছিল ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন। তিনি ৯ নভেম্বর ১৮৭৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২১ এপ্রিল ১৯৩৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
আল্লামা ইকবালের সমাধিস্থল পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদল ১৬৭১-১৬৭৩ সালে মোগল স¤্রাট আওরঙ্গজেব প্রতিষ্ঠিত বাদশাহি মসজিদ পরিদর্শন করে। পাকিস্তানের লাহোরের ইকবাল পার্কে অবস্থিত মসজিদটি দেশটির একটি অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র। এটি পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ। পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মসজিদ। মসজিদটির অভ্যন্তর ও বাইরের চত্বরে এক লাখ লোকের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদটিতে তিনটি গম্বুজ ও আটটি মিনার রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৬ ফুট ৪ ইঞ্চি সম-উচ্চতার চারটি মিনার রয়েছে। ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে ২৯টি মুসলিম রাষ্ট্রের প্রধান বাদশাহি মসজিদে শুক্রবারের জুমার নামাজ আদায় করেন।
অতঃপর প্রতিনিধিদল ১৫৬৬ সালে মোগল সম্রাট আকবর নির্মিত লাহোর ফোর্ট বা লাহোর দুর্গ পরিদর্শন করেন। লাহোর দুর্গের অন্যতম আকর্ষণ হলো সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে নির্মিত পিকচার ওয়াল এবং সম্রাট শাহজাহানের আমলে নির্মিত নৌলাখা প্যাভিলিয়ন, শিশমহল ও পরিমহল নামে অভিহিত সামার প্যালেস। লাহোর ফোর্ট প্রায় ৫০ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ফোর্টটি মোগল, মারাঠা, শিখ ও ব্রিটিশরা ব্যবহারের পর বর্তমানে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যবস্থাপনাধীন।
রাতে প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিও টিভি পরিদর্শন করে। টিভি স্টেশনটির সব ধরনের অনুষ্ঠান উর্দু ভাষায় সম্প্রচারিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার প্রতিনিধি দলকে এর সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্তাকারে দলীয় প্রধান ও অপর দু’জন সদস্য বক্তব্য প্রদান করেন যা পরবর্তীতে চ্যানেলটির নির্ধারিত সংবাদে সম্প্রচারিত হয়।
৭ মে ২০২৪ ছিল লাহোরে অবস্থানের শেষ দিন। ওই দিন বেলা ১১টায় প্রতিনিধিদল হোটেল ত্যাগ করে বেসরকারি টিভি চ্যানেল সামা টিভির কার্যালয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে। চ্যানেলটির কার্যালয়ে পৌঁছালে নির্বাহী পরিচালক (পরিচালন) শহীদুর রেহমান প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান। অতঃপর নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক (সংবাদ) ও মহাব্যবস্থাপক (ডিজিটাল মিডিয়া) প্রতিনিধিদলের কাছে চ্যানেলটির সম্প্রচারবিষয়ক তথ্যাদি উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রম অবলোকনের ব্যবস্থা করেন। প্রতিনিধিদলকে অবহিত করা হয়, এটি পাকিস্তানের অত্যন্ত জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল। এটি থেকে সংবাদ, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াবিষয়ক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। এ টিভি চ্যানেলটির টকশো দর্শকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। প্রতিনিধিদলের সম্মানে চ্যানেলটির পক্ষ থেকে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। টিভি চ্যানেলটি পরিদর্শনকালীন পিআইডি লাহোরের সহকারী পরিচালক মিস রুহা খান ও মিস তালাত নাসিম উপস্থিত ছিলেন। ভোজ শেষে প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদের উদ্দেশে যাত্রার নিমিত্ত টিভি স্টেশন থেকে বিদায় নেয়।
প্রতিনিধিদল বেলা সাড়ে ৩টায় এম-টু এক্সপ্রেসওয়েযোগে দাইয়ু বিলাসবহুল বাসে ইসলামাবাদের উদ্দেশে যাত্রা করে। লাহোর পিআইডির সহকারী পরিচালক মিস আরফা প্রতিনিধিদলের সাথে সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। এম-টু এক্সপ্রেসওয়ে ছয় লেনবিশিষ্ট। এটি ১৯৯৭ সালে উদ্বোধন হয়। লাহোর থেকে ইসলামাবাদের দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার যা বিলাসবহুল বাসে পাঁচ ঘণ্টায় অতিক্রম করা যায়। এটি একটি অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে এবং এর উভয় পাশে বেশ কয়েকটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত রেস্টুরেন্ট রয়েছে। লাহোর থেকে ইসলামাবাদ যাওয়ার সময় এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশের দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম। যাত্রাপথে রাভি নদী, পিংক সল্ট খনি, অলিভ বাগান, সুবিস্তৃত গমক্ষেত ও সুউচ্চ পাহাড় প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যের বৈচিত্র্যে অপরূপ।
ইসলামাবাদ পৌঁছালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্প্রচার বিভাগের পরিচালক জাহিদুল্লাহ এবং উপপরিচালক মিস আমিনা ইকবাল ও মিস ইকরা বাসস্টেশনে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান। বাসস্টেশন থেকে পুলিশ এস্কর্ট সহকারে প্রতিনিধিদলকে ইসলামাবাদে তাদের অবস্থানের জন্য নির্ধারিত রামাদা হোটেলে নেয়া হয়।
হোটেলে নৈশভোজ ও রাত যাপনের পর ৮ মে ২০২৪ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা অবধি বহিঃসম্প্রচার বিভাগের নির্বাহী মহাপরিচালক প্রতিনিধিদলকে ওই বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। নির্বাহী মহাপরিচালক জানান, প্রতি বছর বহিঃসম্প্রচার বিভাগ পাকিস্তানের বন্ধুপ্রতিম দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের পাকিস্তান সফরে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন। এ সফরগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের অধিকতর উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণ। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দলনেতা প্রতিনিধিদলের সদস্যদের পরিচয়পর্ব প্রদান-পরবর্তী বহিঃসম্প্রচার বিভাগ যে বন্ধুপ্রতিম দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের জন্য সফরের আয়োজন করে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন তার প্রশংসা করেন এবং এ যাবৎকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সর্বাধিক সংখ্যক প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বহিঃসম্প্রচার বিভাগ থেকে প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে। সেখানে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অবস্থান করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিধিদলকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিবেশী ও ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক, সার্কের নিষ্ক্রিয়তা এবং উপমহাদেশের দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী আলোকপাত করেন। ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী তার বর্তমান দায়িত্ব পালনের আগে বাংলাদেশস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনে তিন বছর রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিনিধিদলের সম্মানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে। প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে দলনেতা বাংলাদেশ যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সহযোগিতা বিনিময়ে সচেষ্ট তা উল্লেখ করে প্রতিনিধিদলের প্রতি যে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেয়া হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠান শেষে প্রতিনিধি দল বেলা আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত ইসলামাবাদের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান আইপিআরআইয়ের কার্যালয় পরিদর্শন করে। আইপিআরআই ইসলামাবাদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সংক্ষিপ্ত রূপ। আইপিআরআই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আইন, কৌশলগত অধ্যয়ন, শাসন ও পাবলিক পলিসি এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসহ জাতীয় নিরাপত্তার সার্বিক বিষয়সহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির ওপর গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। সংস্থাটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আইপিআরআইয়ের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব:) ড. রাজা মুহাম্মদ একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত। তার বর্ণাঢ্য চাকরিজীবনে তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। আইপিআরআইয়ের প্রেসিডেন্ট প্রতিনিধি দলকে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণাকার্যক্রম এবং প্রকাশিত জার্নাল ও বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রকাশনা বিষয়ে অবহিত করেন। তার বক্তব্য থেকে জানা যায়, আইপিআরআই নিয়মিত সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করে থাকে। এতে দেশ ও বিদেশের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে দলনেতা বাংলাদেশেও যে অনুরূপ একাধিক গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বা থিংকট্যাংক রয়েছে সে বিষয়ে ধারণা দেন এবং প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান।
অতঃপর বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা অবধি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদের উত্তরে মারগালা পর্বতমালার কেন্দ্রভূমি দামান-ই-কো নামক হিলটপ গার্ডেন ভ্রমণ করে। এটি একটি পর্যটক আকর্ষণস্থল, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪ শ’ ফুট এবং ইসলামাবাদ থেকে ৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। দামান-ই-কো এর পাহাড়চূড়া থেকে ইসলামাবাদ শহরের পূর্ণ দৃশ্য অবলোকন করা যায়। রাতের বেলা পাহাড়চূড়া থেকে আলো ঝলমল ইসলামাবাদ শহরের দৃশ্য নয়নাভিরাম। দামান-ই-কোতে বিপুলসংখ্যক বানরের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, শীতকালে মারির উচ্চ পর্বতমালা থেকে সেখানে বাঘের আনাগোনা দেখা যায়।
রাতে দামান-ই-কো এর পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত মোনাল রেস্টুরেন্টে পিআইডি ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে প্রধান তথ্যকর্মকর্তা নৈশভোজের আয়োজন করেন। নৈশভোজে প্রতিনিধিদলের ভ্রমণসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। নৈশভোজপর্ব রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। নৈশভোজস্থল থেকে রাত ঝলমলে ইসলামাবাদ শহরের দৃশ্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। মোনাল রেস্টুরেন্ট থেকে প্রতিনিধিদলের ইসলামাবাদ শহরস্থ হোটেলে পৌঁছাতে মধ্যরাত ছুঁয়ে যায়। (চলবে...)
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
উৎসঃ নয়া দিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন